২০১৮ সালে এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সেটাই এখনো হয়ে আছে টাইগ্রেসদের সর্বোচ্চ অর্জন। আরেকটি এশিয়া কাপ শুরুর আগে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি টগবগ করছেন আত্মবিশ্বাসে। তার লক্ষ্য চার বছর আগের ওই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি ঘটানো।
শনিবার (১ অক্টোবর) থেকে বাংলাদেশে শুরু হচ্ছে নারী এশিয়া কাপের অষ্টম আসর। সবশেষ তিন আসরের মতো এটিও হবে টি-টোয়েন্টি সংস্করণের। সাতটি দল অংশ নিচ্ছে এবার। স্বাগতিকরা ছাড়া বাকিরা হলো আসরের সফলতম দল ও ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সবগুলো ম্যাচের ভেন্যু সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম।
এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে থাইল্যান্ড নারী দলকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল নয়টায়। এর আগের দিন শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সিলেটে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার নিগার।
শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য জানান তিনি, ‘ভালো খেলার সময় আসলে শেষ। ট্রফি যেহেতু আমাদের ছিল, চেষ্টা করব, ট্রফিটা যেন আমাদেরই থাকে। আর ভালো ক্রিকেট আমরা খেলছিও। লক্ষ্য অবশ্যই ভালো ক্রিকেট খেলা ও ট্রফি নেওয়া।’
‘আপনারাই (গণমাধ্যমকর্মী) বলে দিলেন, মেয়েদের হোম ভেন্যু আসলে সিলেট। আমরা চেষ্টা করব এই হোম ভেন্যুর পুরো সুবিধা নেওয়ার জন্য। কারণ, আমরা এখানে বেশি ক্রিকেট খেলি।’
মাঝের সময়ে পাল্টে গেছে অনেক কিছু। প্রতিপক্ষ দলগুলোও উন্নতি করেছে। তবে নিজেদের পরিকল্পনা ঠিক রেখে এগিয়ে যাওয়ার দিকেই নজর বাংলাদেশ দলনেতার, ‘আমরা ওভাবে কোনো চ্যালেঞ্জ মনে করছি না। আমাদের লক্ষ্য হলো ম্যাচ ধরে ধরে খেলা। অন্য দলের শক্তি-দুর্বলতাও আমরা দেখছি না। আমরা চাচ্ছি নিজেদের খেলাটা ঠিকমতো খেলতে। আমরা যদি পরিকল্পনা অনুসারে মাঠে খেলতে পারি, তাহলে আমাদের মনে হয় চ্যালেঞ্জ নিতে হবে না।’
‘সব দলই উন্নতি করেছে। আমরাও উন্নতি করেছি। এখন ক্রিকেটীয় পরিবেশের পরিবর্তন ঘটেছে বা প্রতিটা দলেরই শক্তি বেড়েছে, পাশাপাশি আমরাও অনেক উন্নতি করেছি। তো আমরা আমাদের ক্রিকেটটা খেলতে চাই, আমাদের পরিকল্পনায় এগোতে চাই।’
আগামী ২০২৩ সালের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত বাছাইপর্বে সম্প্রতি অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। সে কারণে এশিয়া কাপের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে বলে মত নিগারের, ‘আবহাওয়া নিয়ে আমরা চিন্তা করছি না। আমরা আবুধাবিতে খেলে এসেছি। সেখানে গরমের মাত্রা আরও বেশি ছিল। তো এখন পর্যন্ত খুব ভালো একটা প্রস্তুতি কিন্তু আমাদের হয়েছে। সবচেয়ে ভালো খবর হলো, ওই গরমেও কোনো খেলোয়াড় চোট পাননি। তারা অনেক ফিট আছে। এখানেও আমরা চাইব যে সবাই যেন ফিট থাকে, সবাইকে যেন পাওয়া যায় এবং মূল একাদশের খেলোয়াড়রা যেন দলের জন্য পারফর্ম করতে পারে।’
২৫ বছর বয়সী নিগার ব্যাট হাতে আছেন দারুণ ছন্দে। বাছাইয়ের পাঁচ ম্যাচে তার ইনিংসগুলো ছিল যথাক্রমে ৬৭, ৩৪, ৫৬*, ১৭ ও ৬। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রত্যাশা তার, ‘আমার নিজের পরিকল্পনা থাকে যে আমার দল আমার কাছে কী চাচ্ছে। যে পরিস্থিতিতে আমাকে যেভাবে খেলতে হবে, আমি সেভাবেই দলের জন্য ভূমিকা রাখতে রাজি। আমি যেহেতু একটা ভালো ধারাবাহিকতায় আছি, সেটা যদি চালিয়ে যেতে পারি, আমার দলের জন্য অনেক ভালো হবে।’
ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই সম্মিলিত অবদান রাখার বার্তা নিগার দেন সতীর্থদের, ‘আমার একটাই কথা থাকে দলের প্রতি যে আমরা সবাই মিলে খেলব, ছোট ছোট হলেও অবদান রাখব। বোলারা যেহেতু ভালো অবস্থায় আছে এবং প্রথমবারের মতো আমি বলব যে ব্যাটাররাও যেহেতু ছন্দে আছে, এটা দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই বিভাগের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও যদি আমরা সবাই ভূমিকা রাখি, তাহলে ম্যাচগুলো আমাদের জন্য সহজ হবে।’