যুক্তরাষ্ট্র অফিস
পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের কথা গোপন রাখকে তাকে অর্থ দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমানে এক সপ্তাহের আত্মসমর্পণের সময় পেয়েছেন ট্রাম্প। রয়েছেন গ্রেপ্তারের মুখে।
ট্রাম্পই হচ্ছেন একমাত্র সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন।
কী কী অভিযোগে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের বিচার হবে, তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু ট্রাম্পের সামনে কী কী ঘটতে যাচ্ছে, তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে বিবিসি।
মার্কিন আইনে পর্ন তারকাকে এভাবে অর্থ দেওয়া অবৈধ নয়। কিন্তু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, ড্যানিয়েলসকে দেওয়া ওই অর্থ তিনি কোহেনকে দেওয়া লিগ্যাল ফি হিসেবে দেখিয়ে ব্যবসার খরচ হিসেবে চালিয়েছেন। প্রসিকিউটররা নিউ ইয়র্কে একে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে ধরেছেন।
বিবিসি লিখেছে, ওই ঘটনায় প্রসিকিউটররা নির্বাচনী আইন ভঙ্গের সম্ভাব্য অভিযোগও করতে পারেন। কারণ ড্যানিয়েলসকে অর্থ দেওয়ার বিষয়টি ট্রাম্প গোপন রাখতে চেয়েছেন, যাতে ভোটররা না জানে পর্ন তারকার সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে। নথি পরিবর্তন করে অপরাধ ঢেকে রাখার এই চেষ্টা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হতে পারে।
প্রসিকিউশনের পক্ষের উকিলরাও স্বীকার করেছেন, যেভাবেই হোক না কেন, এটি কোনোভাবেই স্পষ্ট মামলা নয়। এই ধরনের বিচারের নজির খুব কমই আছে। সেইসঙ্গে নির্বাচনী প্রচারের অর্থ ও ব্যক্তিগত ব্যয় সীমা অতিক্রমের ঘটনায় রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার চেষ্টা অতীতে ব্যর্থ হয়েছে।
এটি প্রমাণ করা কঠিন হবে, বলেন নিউ ইয়র্ক সিটি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির প্রাক্তন আর্থিক প্রসিকিউটর ক্যাথরিন ক্রিশ্চিয়ান।
ট্রাম্পের ভাগ্যে এখন কী
বৃহস্পতিবার বিকালে গ্র্যান্ড জুরি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু অভিযোগগুলো কী কী তা প্রকাশ করা হয়নি। ট্রাম্পকে একজন বিচারক অভিযোগগুলো পড়ে না শোনানো পর্যন্ত সেগুলো প্রকাশ্যে আনা হবে না।
নিয়ম অনুযায়ী ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিস থেকে ইতোমধ্যে ট্রাম্পের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, যাতে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট আত্মসমর্পণ করেন। ট্রাম্পের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আগামী মঙ্গলবার তিনি নিউ ইয়র্কের ম্যানহটন আদালতে হাজির হতে পারেন।
আইনজীবীরা যেহেতু ইঙ্গিত দিয়েছেন যে নিউ ইয়র্ক কর্তৃপক্ষকে ট্রাম্প সহযোগিতা করবেন, ফলে তাকে গ্রেপ্তারে কোনো পরোয়ানা জারির প্রয়োজন হবে না।
ট্রাম্পের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজও রয়েছে। ফলে নিউ ইয়র্ক এলাকার বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরের কোনো একটিতে উড়ে যেতে পারেন তিনি। এরপর গাড়িতে করে ম্যানহটনের আদালতে যাত্রা করতে পারেন।
বিবিসি জানিয়েছে, ছোটখাটো অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে বিচারে জরিমানা গুণতে হতে পারে। তবে ট্রাম্প যদি গুরুতর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তার সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। যদিও কিছু আইন বিশেষজ্ঞের অনুমান, দোষী হলেও সম্ভবত তার জরিমানাই হবে, কারাগারে থাকার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।