নিজস্ব প্রতিনিধি।। দেশের সোনালী আঁশ পাট। সময়ের সঙ্গে অনেকটাই হারিয়ে যাওয়া এই আঁশ নতুন করে ঠাঁই পাচ্ছে আমাদের পোশাকে, ঘরে, অফিসে। ইতিমধ্যে হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেতে শুরু করেছে। অনেকেই আছেন যারা দেশীয় আমেজে সাজাতে চান নিজেকে, নিজের আশেপাশের পরিবেশকে। তাদের কাছে পাট এবং হাল ফ্যাশানের যুগলবন্দী বেশ আকর্ষণীয়।
একটা সময় ছিল, যখন পাটের পণ্য মানেই বোঝাতো দড়ি, চট আর বস্তা। তবে এখন ব্যাপারটা একেবারেই ভিন্ন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন পাট এসেছে নানা আঙ্গিকে, নানা রূপে। বর্তমান সময়ের যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পাট পণ্য নিয়ে এসেছেন বিভিন্ন পোশাক সামগ্রী।
সাজানোর ক্ষেত্রে সবার আগে প্রাধান্য দেওয়া হয় নিজেকে। তাই পছন্দের পোশাক থেকেই শুরু ফ্যাশানের যাত্রা। পোশাকে পাটের ব্যবহার চলে আসছে অনেক আগে থেকেই। পাটবস্ত্রের তৈরি সেলোয়ার, কামিজ, ফতুয়া, পাঞ্জাবি আজও ঠাঁই পায় ফ্যাশান হাউসগুলোতে। পাটের তৈরি বলে যে এইসব পোশাক ভারী বা একঘেয়ামি হবে তা কিন্তু একেবারেই ভুল ধারণা। ডিজাইনের ক্ষেত্রে ঋতু, হাল ফ্যাশান, বয়স ইত্যাদিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, সোনালি আঁশের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে অন্যান্য তন্তুও। যা একদিকে অধুনিক অন্যদিকে আরামদায়কও। তাই যাঁরা গতানুগতিক ফ্যাশান ছেড়ে নতুন কিছু খুঁজছেন তারা নির্দ্বিধায় বেছে নিতে পারেন পাটবস্ত্রের তৈরি পোশাক।
সাজে পরিপূর্ণতা আনতে পোশাকের সঙ্গে চাই ম্যাচিং অ্যাকসেসরিজ। এক্ষেত্রেও রয়েছে পাটের পণ্যসমাগ্রী। পাটের তৈরি অলংকার, জুতা, বেল্ট, ব্রেসলেট, ব্যাগে সাজে যেকোনো লুকের সঙ্গে মানিয়ে যায়। ডিজাইনের ভিন্নতা, রঙের থেকে সহজে বেছে নেওয়া যায় পছন্দেরটি। যেকোনো রঙ বা লুকের সঙ্গে সঙ্গে পাটের অ্যাকসেসরিজ খুব সুহজেই মানিয়ে যায়।
নিজেকে সাজানোর পর এবার পালা আপন ভুবনকে সাজানোর। দিনের বেশিরভাগ সময় বাড়িতে বা অফিসে কাটানোর ফলে অচিরেই এই স্থানগুলো হয়ে ওঠে আমাদের আপনভুবন। তাই এর সাজগোজেও দেওয়া চাই মনোযোগ।
ঘর সাজাতে পাটের রয়েছে একাধিক অপশন। পাটের ল্যাম্প শেড, কুশন, কাভার, চাদর, শো-পিস, ম্যাট, ছবি হতে পারে দারুণ আকর্ষণীয়।
পাট পণ্যের দীর্ঘস্থায়িত্ব অনেক বেশি, যা আবার অনেক সময় একাধিক বার ব্যবহার করা যায়। তাই নির্দিধায় বলা যায় পাটের পণ্য সাশ্রয়ী। বহুল ব্যবহৃত প্লাস্টিক ব্যাগ বা পলিথিনের মতো এটি পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর নয়।
দিনদিন বাড়ছে পাটজাত পণ্যের চাহিদা। ঐতিহ্যবাহী পণ্য বলেই পাটজাত পণ্য কিনছেন মানুষ। তাই পাট দিয়ে তৈরি নানারকম আকর্ষণীয় ফ্যাশনেবল পণ্যের দিকে ক্রেতাদের আগ্রহের কমতি নেই। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পাটের সুদিন ফিরে এসেছে। তাইতো বলা বাহুল্য বাংলার পাট-বিশ্বমাত। বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নে পাটপণ্যের নতুনত্ব সত্যিই প্রশংসনীয় দাবিদার রাখে। এবং মাঠ পর্যায়ে কৃষক-কৃষাণীরা বিশ্বাস রাখে পাট পণ্য বিক্রি করে সামনে আরো অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।