২ রা আগস্ট, ২০২৪, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর, জীবনাদর্শ বিষয়ক সেমিনারের ৯৮৪ তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। জানিপপ কর্তৃক আয়োজিত জুম ওয়েবিনারে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জানিপপ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মো: মাসুদুল হক চৌধুরী।
সেমিনারের মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার এন্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ এর পি এইচ ডি গবেষক ও বি সি এস এডুকেশন ক্যাডার এর সদস্য বাবু রণজিৎ মল্লিক।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপকমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আকলিমা জাহান।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নারী নেত্রী হাসিনা সুলতানা, শিক্ষক নেত্রী মিসেস সংগীতা বিশ্বাস ও জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার সাদিয়া হালিমা।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. কলিমউল্লাহ বলেন, দেশের এই ক্রান্তিকালে প্রতি পলে পলে বঙ্গবন্ধুর শূন্যতা অনুভব করছি। এই সময় যদি তার দিক নির্দেশনা পাওয়া যেতো তাহলে, আমার ধারনা, আমরা এই সংকট হতে উত্তোরণ ঘটাতে সক্ষম হতাম।
সেমিনারের প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক চৌধুরী বলেন, আজকের আলোচনার শুরুতে আমি জানিপপ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড নাজমুল আহসান কলিমুল্লা স্যারের সুচনা উক্তি টি দিয়ে শুরু করতে চাই। দেশের বর্তমান আবস্থ্যায় বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশানার প্রয়োজন আমরা হাড়ে হাড়ে অনুভব করছি।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগ কে একটি জনসম্পৃক্ত রাজনৈতিক অনুভূতিতে পরিণত করেছিলেন । তিনি জনগণের হৃদয় স্পন্দন বুঝতেন এবং সে ভাবে কথা বলতেন এবং জনগনকে আপ্লুত করার এক মোহণীয় ক্ষমতা তার ছিল।
তিনি রাজনীতিতে এমন শিষ্ঠাচার চালু করেছিলেন যাতে তার বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা ও তার প্রতি মুগ্ধ থাকতেন।
যারা তার বিরুদ্ধে রাজনীতি করতেন বয়োজ্যেষ্ঠ ছিলেন তাদেরকে সমীহ করতেন প্রয়োজনে তাদের সাথে ইনফরমাল আলাপ ও করতেন। ফজলুল কাদের চৌধুরী রাজনীতিতে কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর সিনিয়র ছিলেন তিনি মুসলিম লীগের নেতা পল্টনে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর বিপক্ষে বক্তৃতা দিয়ে ৩২ নম্বরে এসে বেগম মুজিবের রান্না খেয়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে সৌহার্দ্য বিনিময় করে চট্রগ্রাম যেতেন, মাওলানা ভাসানী বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ছিলেন কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাকে সম্মান করে কথা বলতেন। দেখা করে দোয়া নিতেন। তেমনি আতাউর রহমান খান , আবুল মুনসুর আহমেদ , সবুর খান সকলের ই খোজ খবর নিতেন। এটা ই ছিল তাঁর রাজনীতির সার্বজনিনতা। কিন্তু আজকের আওয়ামী লীগের নেতা মন্ত্রী এম পি দের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর সে শিক্ষা নেই। তার আজ জাতির ক্রন্তি সময়ে অনেকে দেশে নেই। সরকার আজ কিংকর্তব্যবিমুঢ় , অথচ এ অবস্থ্যা কোটা আন্দোলনের শুরুতে ই সামান্য পদক্ষেপে এড়ানো যেতো। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থ্যার নিস্ক্রিয়তা, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভুল সিদ্ধান্ত ও সরকারের বলেন
রাজনৈতিক বিচক্ষণতার অভাব ই আজ দেশের এ অবস্থ্যা সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আওয়ামী লীগ ও সরকার ই নাশকতা ও জীবন হানীর সুযোগ করে দিয়েছে।
এত মন্ত্রী , উপদেষ্টা , প্রশাসন থাকতে সব ই একজন শেখ হাসিনা কে করতে হচ্ছে। কেন? হাইব্রিড রা মাঠে নেই, ত্যাগীরা মার খাচ্ছে।
২০০৮ সালে যে তরুণদের ভোটে আওয়ামী লীগ নিরুঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছিল সেই তরুণরা আজ সরকার ও আওয়ামী লীগের বিপক্ষে ? কেন। সব দাবী মানা হলো, আন্তর্জাতিক ভাবে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তবু ও আন্দোলন কেন। যখন আমরা আলোচনা করছি তখন শাহবাগ, পল্টন উত্তরায় আন্দোলন চলছে।
পুলিশ , বিজিবি, সেনাবাহিনী মাঠে তবুও থামানো যাচ্ছে না।
বঙ্গবন্ধুর বাংলদেশ আজ সন্ত্রাসীদের দখলে।
আরেক রক্তাক্ত স্বদেশ।
এ অবস্থা কোন ভাবে মানা যায় না। যারা এক মাস আগে গণভবনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থায় ছিল সে শিল্পী সমাজ আজ রাস্তায়।
কোন মৃত্যু ই গ্রহণযোগ্য নয় তা যে ভাবেই ঘটুক দায় কিন্তু সরকার প্রশাসন এর দায় এড়াতে পারবেনা।
অবিলম্বে একটি সুষ্ঠ পরিবেশ আশা করছি যা হউক বঙ্গবন্ধু কণ্যার উদ্যোগে।
সেমিনারের বিশেষ অতিথি অধ্যক্ষ আকলিমা জাহান বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল এই মাসে। বর্তমানে দেশ একটি সংকটময় মুহূর্ত পার করছে।
তিনি আশা করেন, জাতি দ্রুতই এই সংকট থেকে মুক্তি পাবে।
সেমিনারের মুখ্য আলোচক পি এইচ ডি গবেষক বাবু রণজিৎ মল্লিক বলেন, জাতির পিতা বাঙালিদেরকে একটি অসাম্প্রদায়িক জাতি ও বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ দেশে রুপান্তর করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তিনি তার দলসহ সর্বস্তরে বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বলেন, যে সকল শিক্ষার্থী অ্যারেস্ট হয়েছে তাদের মুক্তির প্রদানের মাধ্যমে এই সংকটময় মুহূর্ত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হতে পারে।
জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার মিসেস সাদিয়া হালিমা বলেন, বায়ান্ন থেকে একাত্তর পর্যন্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ছিলেন সংগ্রামী জনতার সর্বোচ্চ জুড়ে।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে এনে দিয়েছে হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা; স্বাধীন পতাকা ও স্বাধীন মানচিত্র।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন, গোপালগঞ্জস্থ বঙ্গবন্ধু বিহজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক কুমার সরকার।