মোঃ সুইট হোসেন নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃনওগাঁয় হঠাৎ করে মাটিবাহী একটি ট্রাক্টর সাইড থেকে সড়কে ওঠার কারনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি প্রাইভেট কার ব্রীজের নিচে পানিতে পড়ে স্বামী ও অন্তসত্বা স্ত্রী’র মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়েছে। এসড়ক দূর্ঘটনাটি ঘটেছে আজ শনিবার ১৩ আগষ্ট দুপুরে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের মহাদেবপুর উপজেলার খোর্দ্দনারায়নপুর (লাটাহার) ব্রীজ নামক স্থানে।
স্থানিয়রা জানান, দূর্ঘটনার সময় সড়কের ধারে মাটি ভরাটের কাজে নিয়োজীত একটি ট্রাক্টর হঠাৎ করেই সড়কে ওঠলে এসময় মান্দা থেকে নওগাঁর দিক অভিমুখি একটি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটনাস্থলে ব্রীজের নিচে কচুরীপানা ভর্তি পানিতে পড়ে তলিয়ে যায়। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানিয় নওহাটামোড় ফাঁড়ি পুলিশ দ্রুত দূর্ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানিয়দের সহযোগীতায় পানির নিচে তলিয়ে থাকা প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে স্বামী-স্ত্রী দু’জনকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দিলে হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষনা করেন। নিহত স্বামী-স্ত্রী হলেন, নওগাঁর মান্দা উপজেলার “কাশোপাড়া” নিচ কুলিহার গ্রামের আঃ খালেক এর ছেলে শিমুল হোসেন (৩২) ও শিমুল হোসেন এর অন্তসত্বা স্ত্রী মোছাঃ জেনিয়া আক্তার (২২)।
দূর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, নওগাঁর মান্দা উপজেলার নিচ কুলিহার গ্রামের শিমুল হোসেন তার অন্তসত্বা স্ত্রী মোছাঃ জেনিয়া আক্তার কে সাথে নিয়ে প্রাইভেট কার যোগে মান্দা থেকে দিনাজপুরে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে খোর্দ্দনারায়নপুর “লাটাহার” ব্রীজ নামক স্থানে পৌছালে হঠাৎ করেই একটি মাটিবাহী ট্রাক্টর সাইড থেকে সড়কে ওঠার কারনে প্রাইভেট কারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রীজের নিচে পানিতে পড়ে ডুবে যায়।
ওসি আরো জানান, দূর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ফাঁড়ি ও থানা পুলিশ দ্রুত দূর্ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানিয়দের সহযোগীতায় পানির নিচে তলিয়ে থাকা প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠালে দায়িত্বরত চিকিৎসক স্বামী-স্ত্রী দু’জন কেই মৃত ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে জেলা পুলিশের “উদ্ধার যান” (রেক্রার) ঘটনাস্থলে পৌছে ব্রীজের নিচ থেকে দূর্ঘটনা কবলীত প্রাইভেটকার উদ্ধার পূর্বক পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংগ্রহকালে এব্যাপারে আইনানুগ পদক্ষেপ পক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওসি।
অপরদিকে স্থানিয়দের অভিযোগ, দূর্ঘটনা স্থলেই সড়কের অপর সাইডে “সরকারি স্থাপনা নির্মাণের” স্থানে মাটি ভরাটের দায়িত্বে থাকা “সাব-ঠিকাদার” জৈনক জাহাজ্ঞীর আলম নামের এক ব্যাক্তি নিয়মনীতি অমান্য করে “মাটি না ঢেকে বহন ও সড়কের উপর ঝুকিপূর্ণ স্থানে কোন দায়িত্ববান লোক না রেখে” প্রতিদিন প্রায় ৭০/৮০ টি ট্রাক্টর ও ড্রাম ট্রাক যোগে মাটি বহন করার কারনে কিছুদিন পূর্বেও পার্শ্ববর্তী বাললাতলীর মোড় নামক স্থানে মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় ৪ জন শিক্ষক ও সিএনজি চালকসহ মোট ৫ জনের দূর্ঘটনাস্থলেই মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছিলো। আজ আবারো মাটি ভরাটের স্থানেই বেপরোয়া মাটিবাহী ট্রাক্টরের কারনেই স্বামী ও অন্তসত্বা স্ত্রী’র মৃত্য হলো। এছাড়াও বিভিন্ন যানবাহনের চালকসহ স্থানিয়রা জানান, “মাটি ঢেকে বহণ না করায়” সড়কের উপর মাটিপড়ে সড়ক ধুলো-বালিতে আচ্ছন্ন ও আকাশের একটু বৃষ্টিতেই সড়কটি কাঁদায় পিচ্ছিল হওয়ার কারনে ইতি মধ্যেই মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন যান-বাহন দূর্ঘটনায় কবলীত হয়ে অনেকেই আহতও হয়েছেন।
এব্যাপারে মুঠোফোনে মাটি ভরাটের দায়িত্বে থাকা “সাব ঠিকাদার” জাহাজ্ঞীর আলম উপরোক্ত অভিযোগ অস্বিকার করে জানান, দূর্ঘটনার সময় মাটিবাহী কোন ট্রাক্টর সড়কে ওঠেনি, এছাড়া মাটি ভরাট “বহণের” কাজ বন্ধ আছে বলে জানান। তবে, দূর্ঘটনার মাটি বহনের কাজ চলমান ছিলো, দূর্ঘটনার পরই তারা মাটি বহন বন্ধ রেখেছেন এমন তথ্যদিয়ে স্থানিয়রা জানান, হঠাৎ করে সাইড থেকে ট্রাক্টর সড়কে ওঠার কারনেই প্রাইভেট কারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এদূর্ঘটনাটি ঘটে।
মাটি যেন সড়কে না পরে “ঢেকে বহন” সহ ঝুকিপূর্ণ স্থানে সংকেত দেওয়ার জন্য লোক রাখা হয় এমন উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন সড়কদিয়ে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহনের চালক সহ সচেতন মহল।