নবীনগরে আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি নিয়ে উত্তেজনা, পুলিশি বাঁধা ডিঙিয়ে একাংশের মিছিল
শুভ চক্রবর্ত্তী, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটি নিয়ে চলছে চরম উত্তেজনা।
গত মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নিয়াজ মোহাম্মদ খানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় রহস্যজনক ভাবে বন্ধ থাকায় ডাকবাংলোতে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশের বাঁধায় ব্যর্থ হন।
এ সময় শত শত কর্মী নিয়ে উপজেলা পরিষদে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করতে চাইলে সে সময়ও বাঁধা দেয় নবীনগর থানা পুলিশ। পরে নেতৃবৃন্দ পুলিশকে কোনোরূপ বিশৃঙ্খলা না হওয়ার নিশ্চয়তা দিলে পিছু হটে পুলিশ।
টান টান উত্তেজনায় ও স্লোগানে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে জড়ো হন উপজেলা আওয়ামী লীগের ১নং সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নিয়াজ মোহাম্মদ খানের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিষ্টার জাকির আহাম্মদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মিজানুর রহমান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান আজহার হোসেন জামাল সহ প্রমুখ নেতাকর্মী।
এ সময় উপস্থিত নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিমকে আহ্বায়ক করে ঘোষিত ৯ সদস্যের প্রস্তুতি কমিটিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের বহু সিনিয়র নেতৃত্ববৃন্দকে বাদ দেওয়ার বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানান, উক্ত কমিটিকে তারা প্রত্যাহার করেন। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় বন্ধ থাকার ব্যাপারেও ঘোর সমালোচনা করেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করতে আসা নেতৃবৃন্দ।
এ দিন বিকেলে, ডাকবাংলোতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের ১নং সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নিয়াজ মোহাম্মদ খানকে আহ্বায়ক করে গঠিত ৩৩ সদস্যের পাল্টা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করেন আহ্বায়ক নিজেই।
এ কমিটির আহ্বায়ক নিয়াজ মোহাম্মদ খানসহ অন্য ৩২ জন সদস্য হলেন অ্যাডভোকেট কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, ব্যারিষ্টার জাকির আহাম্মদ, ইঞ্জিনিয়ার কবির আহমেদ ভূঁইয়া, সফিকুল ইসলাম শফিক, মোঃ মনিরুজ্জামান মনির, মোঃ শাহরিয়ার বাদল, কাজী ইয়াবের হাসান জামিল, ডাঃ মিজানুর রহমান, অ্যাডভোকেট জুলকার নাঈম, ভিপি আবদুর রহমান, অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান, আজহার হোসেন জামাল, প্রবীর ভট্টাচার্য, নিয়াজুল হক কাজল, আবদুল খালেক বাবুল, জিএস মোঃ শফিকুর রহমান, জাকির হোসেন সাদেক, ভিপি এনামুল হক এনাম, প্রণয় কুমার ভদ্র, মোঃ নাছির উদ্দিন, তোফাজ্জল হোসেন টেনু, কবির আহমেদ হোসেন, আবুল বাশার, এডভোকেট হেলাল উদ্দিন, বিপুল চন্দ্র সাহা, মোঃ মাশুকুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান নান্নু, অ্যাডভোকেট আশিশ, মোঃ মাহাবুব রেজা, শওকত ওসমান, শিউলী রহমান ও মোঃ সফিকুল ইসলাম।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের তিনবারের সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিমকে আহ্বায়ক করে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের এমপি এবাদুল করিম বুলবুল, সাবেক এমপি ফয়জুর রহমান বাদল, এম এ হালিমের সাক্ষরযুক্ত পত্রে ঘোষিত ৯ সদস্যের আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটির কাউকেই পাল্টা ৩৩ সদস্যের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে রাখা হয় নি।
একই দিনে নবীনগর সদর এলাকায় আনন্দ মিছিল করেছে, ২৬ মার্চ ঘোষিত নবীনগর উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সদস্যরা।
এ নিয়ে নবীনগরের সর্বমহলে বইছে সমালোচনার ঝড়। নবীনগরে দিনভর এমন উত্তেজনার মধ্যেও উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সার্বক্ষণিক তৎপরতায় কোনোরূপ বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায় নি।