রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা ও পুতিনের কড়া সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যু ইস্যুতে দেশটির বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়ার ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয় আর রাশিয়ার সামরিক খাতকে টার্গেট করে নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছে ওয়াশিংটনও। খবর বিবিসির।
তবে রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, নাভালনির মৃত্যুর কারণ এখনো অজানা এবং প্রাথমিক তদন্ত অব্যাহত থাকায় পরবর্তী দুই সপ্তাহের জন্য তার দেহ ছাড়তে অস্বীকার করা হয়েছে। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ আসন্ন নিষেধাজ্ঞার বিস্তারিত এখনো প্রকাশ্যে আনেনি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা রুশ কর্মকর্তারা আর তাদের দেশে সফর করতে পারবেন না। ব্রিটেনে যদি তাদের কোনো সম্পদ থেকে থাকে, তাও আটকে দেয়া হবে।
একই দিনে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, নাভালনির মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া হিসাবে রাশিয়ার ওপর ‘আরও একদফা নিষেধাজ্ঞা’ চাপাতে চলেছে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের দুই বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্প ঘাঁটির বিভিন্ন উপাদান এবং রাশিয়ার রাজস্বের উৎসগুলোকে ব্যাহত করতে আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া কর সংগ্রহের মাধ্যমে রুশ অর্থনীতি সচল রাখার ব্যবস্থার ওপরেও আঘাত হানতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজটি।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড ক্যামেরন বলেন, যারা নাভালনির সঙ্গে ‘নৃশংস আচরণ করেছেন’, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। ব্রিটিশ সরকার নাভালনির মৃতদেহ অবিলম্বে তার পরিবারের কাছে ছেড়ে দেওয়ার এবং তার মৃত্যুর আসল কারণ জানতে পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
ব্রিটেনের নিষেধাজ্ঞার অধীনে যারা আছেন— কর্নেল ভাদিম কনস্টান্টিনোভিচ কালিনিন (পেনাল কলোনির প্রধান), লেফটেন্যান্ট কর্নেল সের্গেই নিকোলাভিচ কোরঝভ (ডেপুটি হেড), লেফটেন্যান্ট কর্নেল ভ্যাসিলি আলেকজান্দ্রোভিচ ভিড্রিন (ডেপুটি হেড), লেফটেন্যান্ট কর্নেল ভ্লাদিমির ইভানোভিচ পিলিপচিক (ডেপুটি হেড), লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলেক্সাভিচ (ডেপুটি হেড) এবং কর্নেল কোল্লাইকোভিচ আলেকজান্ডার ভ্যালেরিভিচ ওব্রেজটসভ (ডেপুটি হেড)।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন যে, গত সপ্তাহে নাভালনি কীভাবে মারা গেছেন তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত না হলেও এর জন্য পুতিন দায়ী। কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, বৈজ্ঞানিক উত্তর যাই হোক না কেন, পুতিন এর জন্য দায়ী।
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন রাশিয়ার আগ্রাসনের দুই বছর পূর্তিকে সামনে রেখে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য এই সপ্তাহে ইউরোপে আসেন।
এছাড়া দেশটির ট্রেজারি বিভাগের বরাতে বিবিসি আরও জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন সম্প্রতি ট্রেজারি কর্তৃপক্ষকে রাশিয়ার যুদ্ধ উৎপাদন প্রচেষ্টায় অর্থায়নকারীদের ওপর নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।