উড়তে থাকা পাকিস্তান ভারতের কাছে হারের পর টানা চার ম্যাচ হেরে যায়। মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ে ফেরার পর ওপেনার ফখর জামান মেনে নেন, ভারতের কাছে হারের পর তালগোল পাকিয়ে ফেলে পাকিস্তান।
একই দশা নিউজিল্যান্ডেরও! টানা চার ম্যাচ জেতার পর ভারতের কাছে হার মানতে হয়। তারপর থেকে হারের বৃত্তে কিউইরা, যা ভাঙতে পারলো না দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও। টানা তৃতীয় ম্যাচ তারা হারলো ১৯০ রানে।
রানরেট এমনিতেই ছিল বেশি। নিউজিল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে সেটা আরও বাড়িয়ে নিয়েছে প্রোটিয়ারা। এতে করে তারা ভারতের সমান ১২ পয়েন্ট নিয়ে উঠে গেছে পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরে।
মাথার ওপর বিশাল রানের বোঝা। তাড়া করতে হবে ৩৫৮। প্রোটিয়া বোলারদের তোপে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ৬৭ রান তুলতে ৪ আর ১০০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে লাথামের দল। শেষ পর্যন্ত ৩৫.৩ ওভারে ১৬৭ রানে অলআউট হয়েছে কিউইরা।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। দলীয় ৮ রানের মাথায় মার্কো জানসেনের শিকার হয়ে ফেরেন ডেভন কনওয়ে (২)। এরপর রাচিন রাবিন্দ্রকেও (৯) দশের নিচে আউট করেন জানসেন।
চাপ কাটাতে উইল ইয়ং চালিয়ে খেলছিলেন। কিন্তু ৩৭ বলে ৩৩ করা এই ব্যাটারকে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ বানান কোয়েটজি। অধিনায়ক টম লাথামও সুবিধা করতে পারেননি। ৪ রান করে কাগিসো রাবাদার বলে কভারে কেশভ মহারাজকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ৬৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে নিউজিল্যান্ড।
হাল ধরতে চেয়েছিলেন ড্যারেল মিচেল। কিন্তু ২৪ রান করে তিনি হন কেশভ মহারাজের শিকার। বাঁহাতি এই স্পিনারের ঘূর্ণিতে বোল্ড হন মিচেল স্যান্টনারও (৭)। ১০০ রানে ৬ উইকেট হারায় কিউইরা।
শেষদিকে গ্লেন ফিলিপস একা লড়াই করে ১৬৭ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন দলকে। ৫০ বলে ৬০ করে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হয়েছেন তিনিই।
দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজ ৪৬ রানে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। ৩১ রানে মার্কো জানসেন ৩টি এবং ৪১ রানে জেরাল্ড কোয়েটজি নেন দুটি উইকেট।
এর আগে সাত ম্যাচের মধ্যে আজ (বুধবার) পঞ্চমবার তিনশোর্ধ্ব রান তুলেছে প্রোটিয়ারা। এবার প্রোটিয়া ব্যাটারদের তাণ্ডবের শিকার নিউজিল্যান্ড। জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন কুইন্টন ডি কক আর রসি ফন ডার ডুসেন। ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৫৭ রানের পাহাড় গড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অর্থাৎ জিততে হলে ৩৫৮ করতে হবে কিউইদের।
পুনেতে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিং দিয়ে যেন বিপদেই পড়ে টম লাথামের দল।
যদিও টেম্বা বাভুমা বরাবরের মতো ব্যর্থ হয়েছেন। উদ্বোধনী জুটিতে ৩৮ রান উঠে, বাভুমা ২৪ করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ১৮৯ বলে ২০০ রানের বিধ্বংসী জুটি গড়েন ডি কক আর ডুসেন।
কুইন্টন ডি কক এই বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে থেকে অবসরে যাবেন, বলে রেখেছেন আগেই। বিদায়ী বিশ্বকাপে রীতিমত স্বপ্নের ফর্মে দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার।
চলতি বিশ্বকাপে সপ্তম ম্যাচ খেলতে নেমে চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। আজ (বুধবার) নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন ছক্কা মেরে, ১০৩ বলে। এর আগে চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকান ডি কক। আজ ১১৬ বলে ১০ চার আর ৩ ছক্কায় তার ব্যাট থেকে এসেছে ১১৪ রান।
ডি ককের পর সেঞ্চুরি পূরণ করেন ডুসেনও। ১০১ বল লাগে তার তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে। ১১৮ বলে ১৩৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন ডুসেন, যে ইনিংসে ৯টি চারের সঙ্গে ৫টি ছক্কা হাঁকান এই ব্যাটার।
শেষদিকে ডেভিড মিলার ৩০ বলে ২ চার আর ৪ ছক্কায় খেলে ৫৩ রানের ক্যামিও। ৭ বলে অপরাজিত ১৫ করেন হেনরিখ ক্লাসেন। শেষ ১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রান তোলে প্রোটিয়ারা। নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদি ৭৭ রানে নেন ২টি উইকেট।