দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাত থেকে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ঢাকার প্রবেশপথ ও মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বলছে, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ছাড়াই দুই দলের সমাবেশ যাতে শেষ হয় সেজন্য পুলিশ কাজ করছে। সমাবেশে মাঠে থাকবেন বাহিনীর ১৩ হাজার সদস্য। সমাবেশ স্থলেও উপস্থিত থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সূত্র জানায়, তাদের দুই হাজার সদস্য মাঠে রয়েছেন। এরই মধ্যে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পাশাপাশি সাইবার ওয়ার্ল্ডেও কাজ করছেন র্যাব সদস্যরা।
এছাড়া মাঠে রয়েছেন পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), এনএসআই, সিআইডিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরাও।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাতে ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, সমাবেশে ১৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। তারা মাঠে কাজ শুরু করেছেন। ঢাকাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে যত প্রকারের নিরাপত্তা নেয়া দরকার সব নেয়া হয়েছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে বলেন, প্রায় দুই হাজার সদস্য মাঠে রেখেছি। যাতে কেউ কোনো ধরনের অপরাধ করতে না পারে। সবধরনের নিরাপত্তায় কাজ করছে র্যাব।
এদিকে দুদলের কর্মসূচি ঘিরে সমাবেশস্থলসহ আশপাশের এলাকায় দুই শতাধিক উচ্চ ক্ষমতার ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, যদি কেউ মাস্টারমাইন্ড থেকে থাকে সেটিকে ঘিরেই আমাদের নিরাপত্তা থাকে। যেকোনো আশঙ্কা তো নোটিশ করে আসবে না। সবকিছু সুন্দর করে হয়ে গেলে আমাদের আর প্রয়োজন ছিল না।
তিনি আরও বলেন, আমরা সেফ সিটি ঢাকা চাই। যেখানে প্রতিটি মানুষ সিকিউরড থাকবে। ডিএমপির দায়িত্বের জায়গা থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে নিরাপত্তার জন্য ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
এদিকে, আজ শনিবার সবচেয়ে বড় মহাসমাবেশ করতে চায় আওয়ামী লীগ। যেকোনো মূল্যে মাঠে থাকার ঘোষণার পাশাপাশি নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিরোধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।
এদিন সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটা আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ, তাই মাঠে থাকতে হবে। আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য মরতে হলে মরব। তবু আওয়ামী লীগ কর্মীরা রাজপথে থাকবে।
এর আগে গত ১৮ অক্টোবর সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। এরপর আওয়ামী লীগও একই দিন ঘোষণা দেয়, তারা ২৮ অক্টোবর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়।