প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর এবং টেকসই ও নিরাপদ মহাসড়ক নেটওয়ার্ক গড়তে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
শনিবার (২২ অক্টোবর) ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) দেয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক নিরাপত্তায় সচেতন নাগরিক সৃষ্টির লক্ষ্যে এ বছর ৬ষ্ঠ জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’ নির্ধারণ সময়োপযোগী ও যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমি জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন উপলক্ষে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর পাঁচ বছরে ১৫ হাজার ১২৮ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করি এবং মোট ৩৭ হাজার ১৭১ কিলোমিটার রাস্তা হেরিংবোন বন্ডে রূপান্তরিত করি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ৬ হাজার ৫২৬ কিলোমিটার পাকা সড়ক ও ১০ হাজার ৮৬৫ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করি। প্রায় ১৯ হাজার বৃহৎ, মাঝারি, ছোট সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করি। পাকশী, ধরলা, দোয়ারিকা, গাবখান, রূপসা, সুরমা (দ্বিতীয়) ও মেঘনা সেতুসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করি। সেই সঙ্গে পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই ও এর স্থান নির্ধারণ করি। সড়ক পথে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সাউথ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ট্রায়াঙ্গল প্রকল্প গ্রহণ করি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর সড়ক নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের সকল জাতীয় মহাসড়ক পর্যায়ক্রমে চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীতকরণ, মেট্রোরেল, বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লাইন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, ওভারপাস-আন্ডারপাস নির্মাণসহ নতুন নতুন সড়ক, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ/পুনর্নির্মাণের ক্ষেত্রে এক নবযুগের সূচনা করেছে। গত প্রায় ১৪ বছরে ৪ হাজার ৪০৪ সেতু, ১৫ হাজার ৮৪টি কালভার্ট ও ২২ হাজার ৪৩৩ কিলোমিটার মহাসড়ক নির্মাণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে বাঙালির আত্মমর্যাদা, গৌরব ও সক্ষমতার প্রতীক স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করে গত ২৫ জুন চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছি। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে দেশের প্রথম ৩.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক সুড়ঙ্গপথ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে।
তিনি বলেন, সরকার সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নের পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। সড়ক নিরাপদ করতে ডিভাইডার স্থাপন, বাঁক সরলীকরণ, সড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ, মহাসড়কে চালকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ ও গতি নিয়ন্ত্রক বসানোসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের সড়কগুলোকে নিরাপদ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হব।