রেললাইন স্থাপনের কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর আজ পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন প্রকৌশলীরা। ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পদ্মা স্টেশন থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া স্টেশন পর্যন্ত ৪১ দশমিক ৫ কিলোমিটার অংশে ট্রেন চালানো হবে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করছে আজ মঙ্গলবার। এই সেতুতে সড়কপথ চালুর ১০ মাসের মাথায় প্রস্তুত হয়ে গেছে রেলপথ। ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর রেলপথের কাজ শেষ করেন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা। প্রথমবারের মতো ট্রেন পাড়ি দেবে পুরো পদ্মা সেতু।
প্রকৌশলীরা জানান, ২৯ মার্চ রেলপথের সবশেষ ৭ মিটার অংশের ঢালাইয়ের মাধ্যমে কাজ শেষ হয়। তবে ঢালাইকৃত অংশ শক্ত হয়ে ট্রেন চলার উপযোগী হতে ৪৮ ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন ছিল। শুক্রবার বিকেলে নির্ধারিত ৪৮ ঘণ্টা শেষ হয়। বিশ্বমানে প্রস্তুত করা হয়েছে সেতুর রেলপথ, যা শত বছরের বেশি সময় টিকবে।
ওই দিন (শুক্রবার) প্রকৌশলীরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন- ঢালাইকৃত অংশ ট্রেন চলার জন্য উপযোগী হয়েছে। অর্থাৎ বর্তমানে ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত সেতুর পুরো পাথরবিহীন রেলপথ। এখন শুধু ট্রেন চলার অপেক্ষা।
আজ দুপুরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পদ্মা স্টেশন থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া স্টেশন পর্যন্ত ৪১ দশমিক ৫ কিলোমিটার অংশে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হবে।
পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রি. জেনারেল সাঈদ আহম্মেদ বলেন, ‘গ্যাংকার দিয়ে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত সাড়ে ৪১ কিলোমিটার রেলপথ পরীক্ষা করে দেখব। এই পথে ডিজাইন-স্পিড ১২০ কিলোমিটার থাকলেও ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিতে টেস্ট রান চালানো হবে।’
রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন উপস্থিত থেকে পরীক্ষামূলক ট্রেনে পাড়ি দেবেন পদ্মা সেতু। দুপুরে মাওয়া প্রান্তে প্রেস ব্রিফিং করবেন মন্ত্রী। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া স্টেশনে প্রস্তুত করা হয়েছে ব্রিফিং মঞ্চ।
রাজধানী কমলাপুর থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সেতুতে যানবাহন চালু রেখেই নিচতলায় পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ। গত বছরের ২০ আগস্ট সেতুতে রেললাইন স্থাপনের উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী। তবে বিভিন্ন জটিলতায় পুরোদমে কাজ শুরু হয় নভেম্বরে। পুরোদমে কাজ শুরুর পঞ্চম মাসে এসে কাজ শেষ হলো।