পুরান ঢাকায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা: প্রত্যক্ষদর্শীর ভয়াবহ বর্ণনা
‘আমি হাসপাতালের ফটকের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। দেখি, একটা লোক দৌড়ে হাসপাতালের দিকে আসছেন। পেছন থেকে দুজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। প্রথম গুলি হাসপাতালের ওপরের দিকে করেন। সেটা সোজা তিনতলার কাচে গিয়ে লাগে। ছয় থেকে সাতটি গুলি ছোড়েন। এরপর এক ব্যক্তির বুকের ডান পাশে গুলি করেন। তাঁর হাতেও গুলি লাগে।’
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় তারিক সাইফ মামুনকে (৫৫)। এ ঘটনার বর্ণনা এভাবেই দিচ্ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী আরাফাত হোসেন।
পেছন থেকে গুলি করা ব্যক্তিরা মাস্ক পরে ছিলেন বলে জানান আরাফাত। দুজনই লাল–কালো রঙের একটি মোটরসাইকেল থেকে নেমে গুলি করা শুরু করেন বলে জানান তিনি।
পুলিশ বলছে, নিহত সাইফ মামুনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায়। তিনি সেখানকার মোবারক কলোনি এলাকার বাসিন্দা। বাবার নাম এস এম ইকবাল।
নিহত ব্যক্তি একসময় আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী ছিলেন, বলছে ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি সূত্র। অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল বলে জানায় পুলিশ।
ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি দৌড়ে হাসপাতালের গেট দিয়ে ঢোকেন। পেছন থেকে বন্দুক হাতে দুজন ব্যক্তি হাসপাতালের গেট থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। ফুটেজে সাতটি গুলি ছুড়তে দেখা যায়। এর মধ্যে তিনটি গুলি ওই ব্যক্তির শরীরে লাগে।
হাসপাতালের ওয়ার্ডমাস্টার মহিবুল্লাহ জানান, বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ হাসপাতালের সামনে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরে শব্দ শুনে সবাই হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে এসে সাইফ মামুন নামের ওই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। প্রথমে তাঁকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে অবস্থার অবনতি হতে থাকলে সেখান থেকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।
হাসপাতালের সামনে থাকা আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাকিব হাসান বলেন, ‘একটা গাড়ি থেকে নামল (নিহত মামুন), তার সঙ্গে একজন ছিল। দেখে মনে হলো বিত্তশালী হবে। সঙ্গে স্যামসাং এস সিরিজের মোবাইল দেখেছিলাম। তাকে তাক করেই দুজনকে গুলি করতে দেখলাম।’
এই প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, ‘পেছনে রাস্তায় পুলিশ ছিল, হাসপাতালের গেটে নিরাপত্তাকর্মীরা ছিল। গুলির আওয়াজ শুনে সবাই এদিক–সেদিক ছোটাছুটি করছিল। প্রথম যখন গুলি করে, সে রাস্তার ওপর থেকে দৌড় ন্যাশনাল মেডিকেলের দিকে এগিয়ে আসতেছিল। মেইন গেট থেকে দু–তিন ফুট সামনে গিয়ে পড়ে যায়। আশপাশের লোকজন হাসপাতালে ভর্তি করানোর চেষ্টা করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা না করিয়ে ঢামেকে পাঠিয়ে দেয়।’
সূত্র: প্রথম আলো


























