জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি অভিযান ও তল্লাশির ঘটনায় নগদ অর্থসহ অর্ধ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সম্পদ লুট ও ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।
আজ রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি করছি। এই ঘটনায় নগদ অর্থসহ ক্ষতি ও লুট হওয়া সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ৫০ লাখ ৮২ হাজার পাঁচশ টাকা। কোনো অফিস বা বাসা তল্লাশির সময় মালিকপক্ষ এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসেবে রাখার সাধারণ আইন অগ্রাহ্য করে পুলিশ যা করেছে তা হানাদার বাহিনীর আচরণকে স্মরণ করিয়ে দেয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বিএনপি কার্যালয় থেকে ল্যাপটপ ও কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সরিয়ে ফেলা হয়েছে অভিযোগ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, অফিস থেকে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, হার্ডডিক্স, নথিপত্র, ব্যাংকের কাগজপত্র, নগদ অর্থ লুট করা প্রকৃতপক্ষে একটি ডাকাতির ঘটনা। ৭ ডিসেম্বর বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি হামলার পর পুলিশের ছত্রছায়ায় ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা কার্যালয়ে ঢুকে বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর ও মালামাল লুটে অংশ নেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পুলিশ তাদের মামলায় বলেছে, বিএনপি নেতা-কর্মীরা নাকি ইট-পাথর, বাঁশের লাঠি এবং ককটেল নিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করেছে। বিপুল ও মারাত্মক সব আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত কয়েক হাজার পুলিশকে ইট-পাথর, বাঁশের লাঠি ও তাদের ভাষায় ককটেল দিয়ে আক্রমণ করার মতো হাস্যকর অভিযোগ জনগণ বিশ্বাস করে না।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, পুলিশের এজাহারেই বলা হয়েছে যে, তারা ৭ ডিসেম্বর বিকেলে মোট ১৭৯টি টিয়ারগ্যাস ও ৪৬০টি শর্টগানের গুলি ছুড়েছে এবং ৬টি সাউন্ড বোমা নিক্ষেপ করেছে। প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। বিপরীতে তাদের ওপর আক্রমণকারী বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যবহৃত অস্ত্র হিসাবে আলামত দেখানো হয়েছে ফুটপাত ও রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া ৫ বস্তা ইটের টুকরা। যা শহরের যেকোনো সড়ক থেকে সংগ্রহ করা যায়। দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য দাবি করেন, এই ঘটনার পর গত কয়েক দিনে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১৩০০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব ঘটনা সরকারের স্বৈরাচারী কায়দায় টিকে থাকার ব্যর্থ প্রয়াস বলেই দেশবাসী মনে করে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।