প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে অবৈধ ইটভাটা ।
আহসানুল ইসলাম আমিন :
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে অর্ধশত ইটভাটার মধ্যে প্রশাসনের অবৈধ ঘোষণা করা প্রায় অধিকাংশ ইটভাটা এখনো বহাল তবিয়তে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। স্থানীয় সুশীল সমাজের কর্তাব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানায়ায়। প্রতিবারই হাই কোর্টের নির্দেশের পর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন, লোকদেখানো ভ্রাম্যমাণ আদালত ও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় যথা নিয়মঅনুযায়ী কিন্তু অগোচরে থেকে যায় বাস্তবতার মূল উদ্দেশ্য।অভিযান এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানাসহ উচ্ছেদ করার একদিন পরই স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাক্সগুলি দেখিয়ে পুনরায় পুরোদমে চালু করা হয় এইসব অবৈধ প্রতিষ্ঠান। এছাড়া যখনই ভ্রাম্যমাণ আদাত এবং উচ্ছেদ অভিযান চালানোর নির্দেশ আসে অবৈধ ইটভাটাগুলোর উপর তখন অধিকাংশ ইটভাটার কার্যক্রম থাকে প্রায় শেষের দিকে তাই প্রশাসনের নির্দেশ স্থানীয় ইটভাটা মালিকরা তেমন তোয়াক্কাও করেন না। এছাড়া ইটভাটা মালিক সমিতির আওতাভুক্ত যারা আছেন তাদের তেমন চিন্তা নেই বললেই চলে, এই মালিক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের দায়িত্ব হলো সমিতির আওতাভুক্ত ইটভাটা মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে প্রায় সবগুলো দফতরের কর্তাব্যক্তিদের মুখ বন্ধ করা। যাতে করে ইটভাটা পুরোদমে চলা কালে কোন দফতর তাদের কাজে ব্যাঘাত না করে।
সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়,একটা ইটভাটা করতে অনেকগুলো দফতরের অনুমোদন প্রয়োজন পরে যেগুলোর মধ্যে স্থানীয় অর্ধশত ইটভাটার ন্যূনতম কোনো কাগজপত্রই নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ইটভাটার মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা বলেন ইটভাটা করতে আমাদের যেসব কাগজ প্রয়োজন হয় সবগুলা কাগজ আমাদের নেই কিছু-কিছু কাগজ আছে কিছু কিছু কাগজ আবার প্রক্রিয়াধীন তারপরও আমরা ইটভাটা চালাচ্ছি সেটা অনেক কায়দা করে। ইটভাটা মালিক সমিতির মাধ্যমে কেউ আবার একক ভাবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই অবৈধ ইটভাটাগুলো চালাই।তারা আরও বলেন প্রতিষ্ঠান চালাতে গিয়ে আমরা বৈধ পথের চেয়ে অবৈধভাবে প্রচুর পরিমানে টাকা দিতে হয়।
সিরাজদিখান ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদিন বলেন, সিরাজদিখানে ইটভাটা সমিতির আওতাভুক্ত মোট ভাটা হলো ৪৮ টি এখানে তেমন বেশী পরিমানে অবৈধ ইটভাটা ছিলোনা সব মালিকই কিছু কাগজ করেছে কিছু এখনো বাকি আছে তবে ইতোমধ্যে ১৯ টি ইটভাটা জরিমানা ও উচ্ছেদ যেহেতু করেছে সেহেতু এই ১৯ টি এখন পর্যন্ত অবৈধ বলে মনে করেন তিনি।
সিরাজদিখান উপজেলায় মোট ইটভাটা কয়টা এবং সেখে অবৈধ ঘোষণা করেছে কয়টা সে বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শরীফুল আলম তানভীর বলেন, আমি এই উপজেলাতে নতুন জয়েন্ট করেছি তাই সঠিক কতগুলো ইটভাটার মধ্যে কতগুলো অবৈধ এখনো বলতে পারবোনা। তবে ইতোমধ্যে আমরা অভিযান চালাচ্ছি নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত হচ্ছে এবং এটা অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য সিরাজদিখান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে কেয়াইন, বাসাইল ও বালুচর ইউনিয়নে প্রায় ৫৫ টির বেশি ইটভাটা রয়েছে। অধিকাংশ ইটভাটায় পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ইট পোড়ানোর কাজ। উপজেলায় আবাসন এলাকার এক কিলোমিটারের ভিতরে গড়ে ওঠা অবৈধ ইটভাটা যেখানে স্কুল মাদরাসা সহ এক কিলোমিটারের ভিতরে আছে গ্রাম বাজার সহ মানুষের বসবাস।সেখানেও কিভাবে আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ইটভাটাগুলো এখনো বহাল তবিয়তে ব্যবসা করে যাচ্ছেন মানুষের মুখে মুখে সে প্রশ্ন।