৩ রা আগস্ট, ২০২৪, শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর, জীবনাদর্শ বিষয়ক সেমিনারের ৯৮৫ তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। জানিপপ কর্তৃক আয়োজিত জুম ওয়েবিনারে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জানিপপ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মো: মাসুদুল হক চৌধুরী।
সেমিনারের মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার এন্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ এর পি এইচ ডি গবেষক ও বি সি এস এডুকেশন ক্যাডার এর সদস্য বাবু রণজিৎ মল্লিক।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর মিডিয়া ও জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
সেমিনারে গেস্ট অব অনার হিসেবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপকমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আকলিমা জাহান।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার লায়লা শারমিন, মেহেরাজ হোসেন ও সাকিব হোসেন।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. কলিমউল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাটি জীবন জন সম্পৃক্ত থেকেছেন।
সেমিনারের প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোঃ মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন,
আজকের প্তেক্ষাপটে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে চাই দেশের যে চলমান অবস্থ্যা বিরাজ করছে তা বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর কণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য অত্যান্ত বিব্রতকর । এবং আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ও আদর্শকে লালন করি তাদের জন্য বড়ই বেদনা দায়ক। বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন জাতীয়তাবাদী নেতা এবং বাঙালী সাংস্কৃতির নবতর বিকাশের বরপুত্র। তিনি জনসম্পিক্ত রাজনীতি করতেন এবং জনগনের হৃদয় স্পন্দন বুঝতে পারতেন যা এখনকার আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে নেই।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে ও একটি অরাজনৈতিক আন্দোলনকে স্তিমিত করতে সম্পূর্ণ ব্যার্থ হয়েছে এখন সব দাবী মানার পর ও তারা তা সামাল দিতে পারছেনা। কোটা আন্দোলন যারা করেছে তাদের মধ্যে কোটার বিন্যাস এর সঠিক জ্ঞান ও ছিল না। আর আদলতে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে ও তাদের যথাযথ ধারনা ছিল না সরকার তা তাদের বোঝাবার সময়োপযোগী সিন্ধান্ত ও নেয় নি তাই দুই শতের উপরে প্রাণহানি হলো ।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, গত ষাট বছরে একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া এত প্রাণহানি কোন আন্দোলনে হয় নি। প্রতিটি জীবন ই মূল্যবান এ প্রাণহানি যারাই ঘটিয়ে থাকুক না কেন ব্যার্থতা কিন্তু আসে সরকারের । বঙ্গবন্ধু কণ্যা ইতিমধ্যে জাতিসংঘের অধিনে আন্তর্জাতিক তদন্ত কে স্বাগত জানিয়েছেন – তিনি সত্য উদঘাটনে আন্তরিক কিন্তু এর কোন প্রতিফলন ঘটছে না। আজকে ও দেখলাম রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিচ্ছে পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও আইন শৃং্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে৷ না না ভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে।
দেশের আকাশে আজ অমানিশার কালো মেঘ, চারিদিক অন্ধকার এর থেকে পরিত্রানের উপায় আমাদের সরকার ও রাজনৈতিক নেতাদের ই বের করতে হবে। ছাত্রদের কে ও বুঝতে হবে যে তারা যেন অন্যের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যাবহৃত না হয়। শিক্ষাজ্ঞনে ফিরে শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখলেই তাদের আগামী হবে সুপ্রসন্ন।আর আন্দোলনের ফসল যদি স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির হাতে চলে যায় তবে হারিয়ে যাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হারিয়ে যাবে আমাদের জাতীয়তার বিকাশ।
আমরা আশাবাদী বঙ্গবন্ধু কণ্যা অচিরেই এ অবস্থার অবসান ঘটাবেন এবং জাতীয় জীবনে স্বস্থি ফিরিয়ে আনবেন।
সেমিনারের মুখ্য আলোচক পি এইচ ডি গবেষক বাবু রণজিৎ মল্লিক বলেন, আমাকে বারবার পিছনে ফিরে যেতে হয়। যখনই আমি বর্তমানের দিকে তাকাই আমাকে পিছনে ফিরে যেতে হয়। সেই মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে ফিরে যেতে হয় আমাদের। ইতিহাসের মুখাপেক্ষী হতে হয় কেননা আমরা বর্তমানকে বুঝতে পারি অতীতের উজ্জ্বল ইতিহাসের মধ্য দিয়ে। যখন আমরা বর্তমানকে দাড় করায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে জাতীয়তা বাদ কে জন্ম দিয়েছিলেন সেটি হলো বাঙালি জাতীয়তাবাদ। সেই বাঙালি জাতীয়তাবাদ এর একটি বৈশিষ্ট্য আমরা জানি সেটি হল ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মনিরপেক্ষতা এবং অসাম্প্রদায়িকতা মিলে আমাদের জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছে। সুতরাং ভাষার ভিত্তিক এবং সংস্কৃতি ভিত্তিক যে পরিচয়টি বাঙালির সেটি হচ্ছে তার জাতীয়তাবাদের মূল বিষয়।
সেমিনারের গেস্ট অব অনার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিসেস আকলিমা জাহান বলেন, বর্তমানের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও মৃত্যু জাতির বিবেক কে ভিষণভাবে নাড়া দিয়েছে। তিনি আশা করেন, সরকার শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নিয়ে একটি স্থিতিশীল অবস্থায় দেশকে ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হবে।
সেমিনারের বিশেষ অতিথি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, শিক্ষার্থীদের রক্তক্ষরণ কোনক্রমেই মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার আদর্শে গড়া রাজনৈতিক সংগঠন আজ ভীষণভাবে ব্যর্থ।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন, গোপালগঞ্জস্থ বঙ্গবন্ধু বিহজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক কুমার সরকার।