তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধকে ধারণ করার আহ্বান জানিয়েছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শুধু ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতিকেই অনুপ্রাণিত করেছিল তা নয়, বরং এই ভাষণ যুগে যুগে বিশ্বের সব অবহেলিত, বঞ্চিত ও স্বাধীনতাকামী জাতি-গোষ্ঠীকে অনুপ্রেরণা জোগাতে থাকবে।
বঙ্গবন্ধু সব যুগেই প্রাসঙ্গিক ও সমকালীন। তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে হবে এবং তার উদার, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ ধারণ করতে হবে।
সোমবার (১৪ মার্চ) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় আগামী ২২ মার্চ আওয়ামী যুবলীগের কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে ১০টি জেলা-গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, নড়াইল, খুলনা, খুলনা মহানগর, বাগেরহাট ও পিরোজপুরের প্রতিনিধিদের নিয়ে বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, এই মার্চ মাস আমাদের মহান স্বাধীনতার মাস, এ মাসের ১৭ তারিখ টুঙ্গিপাড়ার এক অজপাড়াগাঁয় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন স্বাধীনতার মহানায়ক, স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ মাসেই ধ্বনিত হয়েছিল স্বাধীনতার অমর বাণী, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ” স্বাধীনতা শব্দটি থেকে, বা স্বাধীনতার অর্থ থেকে বঙ্গবন্ধুকে আলাদা করা সম্ভব না। চেষ্টা যে হয় নাই তা না। চেষ্টা করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের পর। ২১ বছর আমরা জয় বাংলা বলতে পারিনি। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতে পারিনি। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই ১৯৭১ সালে গুটি গুটি পায়ে উদয় হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতার লাল সূর্য। বঙ্গবন্ধুর ৫৬ বছর বয়সের ২৩টি বছরই কেটেছে এই স্বাধীনতার সংগ্রামে, জেল খানার সেই নিভৃত কুটিরে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য এই বঙ্গবন্ধুকেই সপরিবারে শিকার হতে হয়েছিল ইতিহাসের নিকৃষ্টতম হিংস্রতা ও বর্বরতার।
যুবলীগ চেয়ারম্যান ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য ১৭ মার্চ দেশব্যাপী সব মসজিদে দোয়া, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা, ১৮ মার্চ যুবলীগের সব ইউনিটে যুবসমাবেশ ও আলোচনা সভা, ১৯ মার্চ দেশব্যাপী সব ইউনিটে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প, রক্তদান কর্মসূচি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। ২০ মার্চ দেশব্যাপী সব ইউনিটে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ২১ মার্চ সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি।
সভায় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে কথা দিয়েছিলাম মুজিব শতবর্ষে ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রতিটি জেলায় অসহায় মানুষের মধ্যে অন্তত একটি ঘর উপহার দেবো। ইনশাল্লাহ ইতোমধ্যেই সারা দেশে অসহায় মানুষের মধ্যে ১৭৫টি ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে যুবলীগ। আমার জানামতে কোনো রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে যুবলীগই প্রথম এধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল উদ্দিন, ডা. খালেদ শওকত আলী, শেখ ফজলে ফাহিম, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, তাজ উদ্দিন আহমেদ, মো. জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।