এই বর্ষায় যারা ঘুরতে পছন্দ করেন তারা চলে যেতে পারেন বান্দরবানের নীলাচল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৬শ’ ফুট উঁচু এ পর্যটন কেন্দ্র। বর্ষায় এ জায়গা থেকে মেঘ ছোঁয়া যায়। এ পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রিসোর্ট। বান্দরবান শহর ছেড়ে চট্টগ্রামের পথে প্রায় তিন কিলোমিটার চলার পরেই হাতের বাঁ দিকে ছোট একটি সড়ক এঁকেবেঁকে চলে গেছে নীলাচলে। এ পথে প্রায় তিন কিলোমিটার পাহাড় বেয়ে তাই পৌঁছাতে হয়।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ দিয়ে নীলাচল যাওয়ার সময় পথের দুপাশে চোখে পড়বে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। নীলাচল থেকে দেখতে পাবেন পাহাড়ের নিচে এবং চূড়ায় আপনার গা ছুঁয়ে মেঘ ভেসে যাচ্ছে। সাদা তুলোর মত মেঘের স্পর্শে আপনার শরীর মন সিক্ত হয়ে উঠবে। মেঘের এই লুকোচুরি খেলা দেখতে দেখতে কখন যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাবে টেরই পাবেন না।
নীলাচলে নতুন আকর্ষণ হিসেবে যোগ হয়েছে ‘ঝুলন্ত নীলা’, ‘নীহারিকা’ ও ‘ভ্যালেন্টাইন’ পয়েন্ট নামে বেশ কিছু স্পট। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে তৈরি করা হয়েছে এ স্পটগুলো। একেক জায়গা থেকে পাহাড়ের দৃশ্যও একেক রকম। যেখান থেকে নীলাচলের ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
নীলাচলের বাড়তি আকর্ষণ হল নীলাচল স্কেপ রিসোর্ট। এই রিসোর্টে রাত্রি যাপন করলে আপনি পাবেন পাহাড়ের এক অসাধারণ জ্যোৎস্না রাতের অভিজ্ঞতা। চুপি চুপি জ্যোৎস্না রাত নেমে এলে দেখবেন চাঁদের আলো ঠিকরে পড়ছে নীলাচলের আঁচলে। তাই বর্ষায় নীলাচল যাওয়ার সময় পূর্ণিমার দিনক্ষণ দেখে যেতে পারেন।
কিভাবে যাবেন: ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি পরিবহন সার্ভিসের বাস ছেড়ে যায়। যেমন হানিফ, ইউনিক, শ্যামলী, এস আলম, ডলফিন ইত্যাদি যেকোনো একটি বাসে চড়ে যেতে পারেন বান্দরবান। নন এসি বাসে ভাড়া ৫৫০ টাকা এবং এসি ৯৫০ টাকা। (ক্ষেত্র বিশেষে ভাড়া কম বেশী হতে পারে)
এরপর বান্দরবান বাস স্টেশন থেকে নীলাচল পর্যটন কেন্দ্র যেতে অটো রিকশার ভাড়া পড়বে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর চাঁদের গাড়ি বা জিপ গাড়ির ভাড়া পড়বে ১২০০ থেকে ৩০০০ টাকা। (ক্ষেত্র বিশেষে ভাড়া কম বেশী হতে পারে)
কোথায় থাকবেন: নীলাচলে থাকতে চাইলে নীলাচল স্কেপ রিসোর্টের তিনটি কটেজের একটি বেছে নিতে পারেন আপনার জন্য। প্রতিটি কটেজে দুইটি করে রুম আছে। প্রতি রুমের ভাড়া পড়বে ৩০০০ টাকা। এখানে থাকতে চাইলে আগে থেকেই যোগাযোগ করে বুকিং দিয়ে রাখবেন।
এছাড়া বান্দরবানে অসংখ্য হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্ট হাউজ আছে। যেখানে ৬০০ থেকে ৩০০০ টাকায় থাকতে পারবেন। কিছু উল্লেখযোগ্য রিসোর্ট ও হোটেল হলো- হলিডে ইন রিসোর্ট, হিলসাইড রিসোর্ট, হোটেল ফোর স্টার, হোটেল থ্রি স্টার, হোটেল রিভার ভিউ ইত্যাদি।