প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে ভাষা ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। হঠাৎ ঘোষণায় স্বাধীনতা আসে নাই, স্বাধীনতা আসে সংগ্রামের পথ পেয়ে। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধাবিত করেছিলেন।’রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে একুশে পদক-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পদক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষা শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও বিকশিত করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
এ সময় নির্বাচিত প্রত্যেককে এককালীন নগদ ৪ লাখ টাকাসহ ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ২৪ জন বিশিষ্ট নাগরিককে এবার একুশে পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার ‘একুশে পদক ২০২২’ প্রদানের জন্য ২৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম ঘোষণা করে।
এ বছর ভাষা আন্দোলন বিভাগে দুজন, মুক্তিযুদ্ধে চারজন, শিল্পকলা (শিল্প, সংগীত ও নৃত্য) বিভাগে সাতজন, সমাজসেবা বিভাগে দুজন, ভাষা ও সাহিত্যে দুজন, গবেষণায় চারজন এবং সাংবাদিকতা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং শিক্ষায় একজন করে পুরস্কার পেয়েছেন।ভাষা আন্দোলনের ক্ষেত্রে মোস্তফা এম এ মতিন (মরণোত্তর) এবং মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল (মরণোত্তর) পুরস্কার পেয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিভাগে মনোনীত হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (মরণোত্তর), কিউএবিএম রহমান ও আমজাদ আলী খন্দকার। নাচের জন্য মনোনীত হয়েছেন জিনাত বরকতুল্লাহ, সংগীতে নজরুল ইসলাম বাবু (মরণোত্তর), ইকবাল আহমেদ ও মাহমুদুর রহমান বেনু, অভিনয়ে খালেদ মাহমুদ খান (মরণোত্তর), আফজাল হোসেন ও মাসুম আজিজ।
সাংবাদিকতায় এম এ মালেক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মো. আনোয়ার হোসেন এবং শিক্ষায় অধ্যাপক ডা. গৌতম বুদ্ধ দাস মনোনীত হয়েছেন।সমাজসেবা বিভাগে মনোনীত হয়েছেন এস এম আব্রাহাম লিংকন ও সংঘরাজ ডা. জ্ঞানশ্রী মহাথেরো। ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন কবি কামাল চৌধুরী ও ঝর্ণা দাস পুরকায়স্থ। গবেষণা বিভাগে মনোনীত হয়েছেন ডা. মো. আব্দুস সাত্তার মণ্ডল, ডা. মো. এনামুল হক (টিম লিডার), ডা. শাহানাজ সুলতানা (টিম) এবং ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস (টিম)।
উল্লেখ্য, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধে অবদান, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখা ব্যক্তি, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে।