মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরো গভীর হচ্ছে। বাংলাদেশি ও আমেরিকানদের মধ্যে সম্পর্ক প্রতিটি প্রজন্মের মধ্যে দিয়ে আরো এগিয়ে যাবে এবং আমরা তাদের সেই অজানাকে দেখার অপেক্ষা করছি।
সোমবার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে দেওয়া ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনের এ বছরকে দুদেশের অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে একটি মাইলফল উল্লেখ করে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আগামী ৫০ বছরে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫ দশক উদযাপনে আপনাদের সঙ্গে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিনেটর টেড কেনেডি বাংলাদেশ সফর করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আমাদের দুই দেশের জনগণের বন্ধন, স্বাধীনতার প্রতি আমাদের অনুরূপ সংগ্রাম এবং স্বাধীনতার প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও ‘স্বাধীনতার পথ অনুসরণ’ করে আমাদের যাত্রার কথা তুলে ধরেন।
এর কিছুদিন পরেই ৪ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে চিঠি পাঠান এবং আশা করেন দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ফলে আগামী বছরগুলোতে আমাদের জনগণের বন্ধন ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পাবে।
আমাদের দুটি দেশ জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন, স্থানীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, গত দুই দশকে বাংলাদেশের মাতৃমৃত্যু হার দুই তৃতীয়াংশে কমিয়ে আনা, কোভিড -১৯ প্রতিরোধে ৬ কোটি ১০ লাখ টিকা সহযোগিতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
২০২১ সালে যেকোনো দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্য বেশি ক্রয় করেছে, যার মূল্যমান প্রায় ৮.৩ বিলিয়ন ডলার। আমাদের শক্তিশালী অংশীদারিত্বকে আরো গভীর করতে আমরা বাংলাদেশকে শ্রমিকদের অধিকার বিষয়ে অগ্রগতি সাধনে উৎসাহিত করি।
আমরা একসঙ্গে জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলা করছি। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা এবং আরো মারাত্মক ঝড়ের কারণে ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত জনপদের সহিষ্ণুতা জোরদার করছি। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর এই সঙ্কট সমাধানে আমরা কাজ করে আসছি।
বাংলাদেশি প্রকৌশলী ফজলুর রহমান খান, যিনি সিয়ার্স টাওয়ারের জন্য নকশা করেছিলেন। এটা বাংলাদেশি ও আমেরিকানদের যৌথ সৃষ্টির একটি অনন্য দৃষ্টান্ত।
সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে লেখা এক চিঠিতে অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন বলেন, সন্ত্রাস, মানবপাচার ও অবৈধ মাদক পাচারের ক্ষতির কবল থেকে আমাদের জনগণকে সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে দু’দেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রশংসনীয়।
শ্রম অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক সুশাসন- বাইডেন প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির মূল বিষয় উল্লেখ করে এসব বিষয়ে সংলাপের ধারাবাহিকতাকে স্বাগত জানান ব্লিঙ্কেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার, উন্নয়নে বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম ও রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের মতো বিষয়গুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের নিবিড় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন।