Sunday , 19 May 2024
শিরোনাম

বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন ভিত্তিহীন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হলেও যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে তা অস্বীকার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেইসঙ্গে তাতে অনেক বিচ্ছিন্ন এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও দাবি করেছে মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে এসব কথা তুলে ধরেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহলী সাবরীন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২৩ সালের মানবাধিকার নিয়ে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন নোট করেছে বাংলাদেশ। আমরা যতই আকাঙ্ক্ষা করি না কেন, বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিখুঁত নয়। কারণ, একটি দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। আর যেসব ক্ষেত্রে আরও উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে সেগুলোর দিকে দৃষ্টি রেখে বর্তমান সরকার এখনও কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকারের প্রচেষ্টার ফলে নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা, শিশুদের অধিকার, বয়স্ক ব্যক্তিদের অধিকার, শ্রমিকদের অধিকার, অভিযোগ নিষ্পত্তি, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক সমাবেশ করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। সরকারের এত অর্জন সত্ত্বেত্ত দুঃখের বিষয় যে মার্কিন প্রতিবেদনে সরকারের অনেক উন্নতি ও অর্জন স্বীকার করা হয়নি। এ ছাড়া কিছু বিচ্ছিন্ন এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রতিবেদনে স্পষ্ট যে, এটি পৃথক রিপোর্ট করা বা অভিযুক্ত ঘটনার রেফারেন্স দিয়ে পরিপূর্ণ নয়।

সেহলী সাবরীন বলেন, এটাও স্পষ্ট, প্রতিবেদনে বেশির ভাগ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বেসরকারি বেনামি সংস্থা থেকে অনুমান নির্ভর তথ্য নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে। সে কারণে প্রতিবেদনে সহজাত এবং পক্ষপাতদুষ্ট বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়েছে।

মানবাধিকারবিষয়ক মার্কিন ওই প্রতিবেদনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গও টানা হয়েছে, যেখানে তাকে গৃহবন্দি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, খালেদা জিয়া গৃহবন্দি নন।

এ ছাড়া প্রতিবেদনে কিছু ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকেও শক্তির অপপ্রয়োগের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এটিও সঠিক নয় বলে দাবি করা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। সেহেলী সাবরীন বলেন, বিএনপি এবং এর রাজনৈতিক মিত্রদের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা প্রায়শই সাধারণ মানুষের জীবনকে ব্যাহত করে এবং সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি করে। এতকিছুর পরও বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অত্যন্ত সংযম প্রদর্শন করছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পেশাদারিত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করছে।

তিনি আরও বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক, মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকারসংক্রান্ত বিষয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিক সংলাপ থাকা সত্ত্বেও প্রতিবেদনে এই বিষয়ে রাষ্ট্র বা সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিকে ছাড়িয়ে বারবার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। অনুরূপ শ্রম অধিকারসংক্রান্ত বিষয়গুলো বিশেষ করে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন এবং ক্রিয়াকলাপের বিষয়ে প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি কেস পতাকাঙ্কিত করা হয়েছে, যেগুলো একাধিক দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে প্রাসঙ্গিক মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।

এসময় গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মুখপাত্র আরও বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের বাহিনী দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বাংলাদেশ আশা করে, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যথাযথ ভূমিকা পালন করবে।

Check Also

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বোরোধান- চাউল সংগ্রহের উদ্বোধন

দিলীপ কুমার দাস নিজস্ব প্রতিবেদক । ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় সরকারীভাবে ধান-চাল সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়েছে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x