দেশের ৫১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যয় নির্বাহের জন্য ১০ হাজার ৫১৫ কোটি ৭১ লক্ষ টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে ইউজিসি। বাজেটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০ হাজার ৪৪৪ কোটি ০৪ লক্ষ টাকা এবং ইউজিসি’র জন্য ৭১ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা।
সোমবার (১৬ মে) ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগমের সভাপতিত্বে ১৬২তম পূর্ণ কমিশন সভায় এ বাজেট অনুমোদিত হয়। সভার কার্যপত্র তুলে ধরেন ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান।
সভায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটের বিস্তারিত দিক তুলে ধরেন ইউজিসি অর্থ ও হিসাব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল বাজেটে ৬ হাজার ২৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার রাজস্ব বাজেট ও ৪০টি প্রকল্পের অনুকূলে ৪ হাজার ৪২০ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকার উন্নয়ন বাজেট রয়েছে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ০৯ হাজার ৫৭৭ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা। সে হিসাবে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়েছে ৯৩৭ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব বাজেট পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৬৪ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা এবং সবচেয়ে কম বাজেট পেয়েছে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা ৩ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা।
উচ্চশিক্ষায় ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে মূল বাজেটে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের তুলনায় বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ৩২ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে মূল বাজেটে গবেষণা খাতে ১১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছিল। উল্লেখ্য, আগামী অর্থবছরে ইউজিসি’র জন্য বাজেটে বরাদ্দকৃত ৭১ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকার মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ২০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ ধরা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ২ কোটি টাকা বেশি।
গবেষণা খাতে অধিক বরাদ্দ বিষয়ে প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের বলেন, ইউজিসি’র মূল লক্ষ্য দেশে গুণগত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত ও গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তোলা। দেশের উন্নয়নে গুণগত গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য ইউজিসি গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে জোর দিচ্ছে এবং এ খাতে বরাদ্দ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করছে।
তিনি আরও বলেন, পাবলিক বিশ্ববদ্যিালয়ের শিক্ষকদের বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য প্রথমবারের মতো ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে জনগণের কষ্টার্জিত প্রতিটি অর্থ স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সর্বোত্তম ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।
সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চাকমা, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এর উপাচার্য মেজর জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এডুকেশনের ডিন অধ্যাপক সুফিয়া বেগম এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান পূর্ণ কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, সভায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (আর্থ সামাজিক অবকাঠোমো) এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের মনোনীত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।