২০১২ সালে উদ্বোধনের পর থেকে গত ৯ বছরে ১১ প্রাণ ঝরেছে, আহত হয়েছে ২৭৮ জন এবং ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকার বিআরটি প্রজেক্টে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ৮২১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২০১৬ সালে শুরু হওয়া ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকার মেট্রোরেল প্রকল্পে প্রাণ ঝরেছে ৩ জনের আহত হয়েছেন ৮৬ জন এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ১৪০ কোটি ১২ লাখ টাকা। বিআরটি প্রকল্পের সীমাহীন অব্যবস্থাপনা আর ঠিকাদারদের দায়িত্বে অবহেলা, প্রজেক্ট কর্তাদের অদক্ষতায় ২৯ হাজার ৫১২ কর্মঘন্টা অপচয়ের পাশাপাশি সবচয়ে নির্মম হলেও সত্য যে এ্যাম্বুল্যান্সে থাকা মুমূর্ষ রোগিদের মধ্য থেকে হাসপাতালে যাওয়ার পথে যানজটেই প্রাণ হারিয়েছেন ১২৬। অসহনীয় দুষণের কারণে অসুস্থ্য হয়েছেন নয় বছরে ৩ হাজার ৫৬২। প্রায় একই অবস্থা ৭ বছর ধরে চলমান চরম বিদ্যুৎ সংকটের দেশে বিদ্যুৎ দ্বারা পরিচালনার পরিকল্পনায় নির্মিতব্য মেট্রোরেল প্রজেক্টের কারণে। ১১ হাজার ৮৬০ কর্মঘন্টা অপচয়ের সাথে সাথে এ্যাম্বুলেন্সে থাকা ৫৪ রোগি দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে পৌছতে না পারায় বিনাচিকিৎসায় মৃত্যু বরণ করেছেন। ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের কারণে অসুস্থ্য হয়েছেন ৩ হাজার ৫৬২ জন। আকাশ-সড়ক-রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনামুক্ত করার জন্য দেশের একমাত্র স্বেচ্ছাসেবি ও গবেষণাধর্মী সংগঠন সেভ দ্য রোড-এর মহাসচিব শান্তা ফারজানা আরো জানান, বিআরটি প্রকল্পটি ২০১২ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেও মূলত কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালে। যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে সুচারুরুপে চলতি বছরের মধ্যে শেষ না করা হয়; আগামী বছর বিআরটির সাথে সাথে মেট্রোরেল প্রজেক্টটি হবে ব্যস্ততম ঢাকায় মরার উপর খড়ার ঘা।
সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, মহাসচিব শান্তা ফারজানা, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া, আইয়ুব রানা, শওকত হোসেন, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সহ-সভাপতি আনজুমান আরা শিল্পী উল্লেখ করেন, এই ২ প্রজেক্টের প্রতিটি পরিকল্পনাকারী এবং কর্তাদের উচিৎ হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের রুপরেখাকে সত্যিকার্থেই বাস্তবায়নের জন্য সতর্কতার সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা। যাতে করে উপকার হোক বা না হোক অপকার যেন না হয় আর; আর যেন কোন প্রাণ না যায় অযাচিত অব্যবস্থাপনায়।
একই সাথে সেভ দ্য রোড নেতৃবৃন্দ মেট্রোরেল ও বিআরটি প্রকল্প চলাকালিন সময়ে এয়ারপোর্ট, উত্তরা, রামপুরা, বাড্ডা, কাওরান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর, শাহবাগ, মহাখালী, গুলশান, বনানী, ধানমণ্ডি, শ্যামলী, গাবতলী, সাতরাস্তা মোড়, মগবাজার, গুলিস্তান, পুরান ঢাকা, নিউ মার্কেট, সায়েদাবাদ যাত্রাবাড়ী এলাকায় বিশেষ টিম সার্বক্ষনিক সতকর্তার জন্য নিয়োগের দাবি জানান। একই সাথে রাজধানীতে ৩ কিলোমিটার অন্তর ‘পুলিশ বুথ’ স্থাপনের মাধ্যমে ধর্ষণ-খুন-নৈরাজ্য-ছিনতাই প্রতিহত করা সম্ভব।