মেজর জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোস্তাক এবং দেশের ভিতরে কিছু প্রতিবিপ্লবী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীচক্র, জামায়াত ইসলাম ও মুসলিম লীগের অনুসারী, পাকিস্তানী মতাদর্শে বিশ্বাসী আমলা এবং পাকিস্তান-আমেরিকার এজেন্টদের ষড়যন্ত্রের স্বীকার হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তাঁর পরিবার। একই সাথে ১৫ই আগস্টে নিহত হন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি ও আমার মা, আরজু মণি।
এই সকল হত্যাকা- এবং আরও শত শত মিলিটারি অফিসারদের হত্যাকা-ের ঘটনার পরিক্রমায় ক্ষমতা দখল করে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিল জিয়াউর রহমান। ক্ষমতা দখল করে ধীরে ধীরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই প্রতিবিপ্লবীদের এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীচক্র, জামায়াত ইসলাম ও মুসলিম লীগের অনুসারী এবং পাকিস্তানী মতাদর্শীদের শক্তিশালী করে তাদের গাড়িতে পতাকা ও ক্ষমতা তুলে দেয় বিএনপি। তাই আমি বলি, বিএনপি এদেশের সবচেয়ে বড় শত্রু। তাঁরা কখনো, কোনদিন এদেশের ভাল চায় নাই। বঙ্গবন্ধুকে শুধু হত্যা নয়, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে পরাজিত করার জন্যই বিএনপি নামক সংগঠনটির সৃষ্টি। ৭৫-এর হত্যাকা- ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের বিরুদ্ধে পরাজিতদের জঘণ্যতম প্রতিশোধ।
আজ ২৫ এপ্রিল, ২০২২ইং, সোমবার, সকাল ১০টায় খিলগাঁও থানা, ৭৫নং ওয়ার্ড, ত্রিমোহনী কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন-আপনারা দেখেছেন বিএনপি যখনি ক্ষমতায় এসেছে এদেশের দুঃখী-দরিদ্র, বঞ্চিত মানুষদের আরও বঞ্চিত করেছে। বাংলাদেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে এটা তাদের বদলা। বিএনপি-জামাতের উদ্দেশ্যই হচ্ছে এদেশের মানুষকে নির্যাতন করে, এদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত করা। তাহলেই তাঁরা তাদের ৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে পারে এবং একই সাথে সেই সময় তাদের দেশবিরোধী কার্যকলাপের এবং নৃশংস কর্মকা-ের অজুহাতও দিতে পরে। ৭১-এর অপকর্মের নৈতিক ভিত্তি পাবার এবং যুক্তি সৃষ্টি করার জন্য এইটা তাদের বাসনা এবং নীল নক্সা। সুতরাং বিএনপির মুখে যখন এই সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র হনন করার অভিযোগ শোনা যায় তখন হাসি পায়। কারণ বিএনপি সেই দল যাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান একটা নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান, জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেছিল।
বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা এদেশে হত্যা, গুম ও সন্ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেছিল। রেফেরেন্ডাম দিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার চেষ্টা করেছিল। পরবর্তীতে বিএনপি নেত্রী ঐ একই পরিকল্পনা ও নীল নক্সা অনুযায়ী এদেশকে দুর্নীতির চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে ছিলেন। সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, সার ও বিদ্যুতের জন্য কৃষকদেরকে গুলি করে হত্যা, শ্রমিক ভাই-বোনদের ওপর অত্যাচার ও গুলি, সাংবাদিক ভাই-বোনদের উপর নির্যাতন, বুদ্ধিজীবীদের নির্যাতন, ২১শে আগস্টের হত্যাকা-সহ এহেন কোন অগণতান্ত্রিক কর্মকা- নাই যা বিএনপি করে নাই। এরপরে আবার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রহসনের নির্বাচন করার পরও তাদের বর্তমান সরকারকে অগণতান্ত্রিক সরকার বলার ঔদ্ধত্য সত্যি সাহসের ব্যাপার।
তিনি আরও বলেন-এখনো তাঁরা সেই নীলনক্সা অনুযায়ী এদেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে ক্ষমতায় আসার পায়তারা করছে। সম্প্রতি ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সাথে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের পিছনে তাদের ষড়যন্ত্রের প্রমাণও বেরিয়ে এসেছে। আসলে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের দুর্ভাগ্য যে যখনই এদেশের দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে, তখনই স্বাধীনতা বিরোধীচক্র, জামায়াত ইসলাম, বিএনপি ও পাকিস্তানী মতাদর্শীদের ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়ে তাদের ভাগ্য উন্নয়নের পথ পালটে দিয়ে এদেশকে একটা জঙ্গি ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে ঐ প্রতিবপ্লবী মহল। ১৯৭৫ সালেও বাংলার দুঃখী-দরিদ্র মানুষ যখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে নিজের পায়ে দাঁড় করাবার চেষ্টা করছিল, ঠিক তখনই জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন সুখী সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে, ঠিক তখনই বিএনপি-জামাতের সেই ন্যাক্কারজণক ভূমিকার অবতারণা। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এব্যাপারে সজাগ আছে।
এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যে অগ্রযাত্রা তা আমরা নস্যাৎ হতে দেব না। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করার তাদের সেই অতি পরিচিত নীলনক্সা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ করবে।
তিনি উপস্থিত সুবিধা বঞ্চিত ভাই-বোনদের উদ্দেশ্যে বলেন-আপনাদেরও সচেতন থাকতে হবে, যাতে করে আপনাদের ভাগ্য নিয়ে কোন স্বার্থান্বেষী মহল ছিনিমিনি খেলতে না পারে। আজকে আপনাদের সবার হাতে মোবাইল, ঘরে বিদ্যুৎ, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের চাহিদা নিশ্চিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা যদি আর একবার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পায়, তাহলে শুধু আপনাদের না, আপনাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরও উন্নত ভাগ্য নিশ্চিত করা হবে। তিনি এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি বলেন-রাজনীতির মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য কি? নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করা? নাকি যাদের নিয়ে আমরা রাজনীতি করি তাদের পাশে দাঁড়ানো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের ভাগ্যের দিকে না তাকিয়ে সাধারণ খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করেছেন। এর জন্য তিনি দীর্ঘ জীবন জেল-জুলুম খেটেছেন। একইভাবে আমাদের প্রিয়নেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন এবং তিনি এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে ধাপে ধাপে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন- আপনারা জানেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে জামাত-বিএনপি। তারা শুধু ষড়যন্ত্রের মধ্যেই আছে এদেশের সাধারণ মানুষের পাশে নেই। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা বাংলাদেশে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বন্যায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে অসহায় কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে, করোনার মহামারিতে মানবতার ঢাল হয়ে সাধারণ মানুষের পাশে ছিল, খাদ্য, চিকিৎসা, বিনামূল্যে অক্সিজেন, ফ্রি এ্যাম্বুলেন্সসহ করোনায় মৃত মানুষের দাফন ও সৎকারে। আপনার বলেন-এই করোনায় জামাত-বিএনপি কাউকে এক মুঠো চাল পর্যন্ত দিয়েছে কি না। দেয় নাই। অথচ তারা ক্ষমতায় থেকে এদেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হত্যা ও গুম করেছে। সাধারণ মানুষকে জিম্মী করে তাদের অধিকার বঞ্চিত করেছে। আমি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-জামাত-বিএনপির সকল ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকবেন। আপনারা আগামীতে ভোটের মাধ্যমে নৌকাকে আবার বিজয়ী করবেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ নবী নেওয়াজ, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মুহা: বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, ডাঃ হেলাল উদ্দিন, ড. অ্যাড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ নিজাম উদ্দিন চৌধুরী পারভেজ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মুকিত চৌধুরী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোঃ সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ আবদুর রহমান, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণা বৈদ্য, সহ-সম্পাদক আবির মাহমুদ ইমরান, মোঃ আরিফুল ইসলাম, মোঃ বাবলুর রহমান বাবলু, মোঃ মনিরুল ইসলাম আকাশ, এ্যাড. মোঃ জয়নাল আবেদীন চৌধুরী রিগ্যান, কার্যনির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ ভিপি মিরান, মোঃ মুজিবুর রহমান, ইঞ্জি. মোঃ মুক্তার হোসেন চৌধুরী কামাল, ইঞ্জি. আবু সাইদ মোঃ হিরো, মোঃ মোবাশ্বার হোসেন স্বরাজ, মোঃ তারিক আল মামুন, এ বি এম আরিফ হোসেন, সৈয়দ আলাউল ইসলাম সৈকত, ডাঃ মোঃ আওরঙ্গজেব আরুসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।