নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপের চিঠি গ্রহণ করেনি বিএনপি। দলটির কেন্দ্রীয় ও গুলশান কার্যালয়ে গিয়ে কাউকে না পেয়ে ফিরে আসেন নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি। পরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকে চিঠি রেখে চলে আসেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিএনপি কার্যালয়ের নিচে একটি চেয়ারে কয়েকটি চিঠি পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কার্যালয়ের গেটে চিঠিগুলো ওভাবে পড়ে থাকতে দেখে কৌতূহল সৃষ্টি হয়।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা মো. মহসিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ওই চিঠি নিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। কিন্তু বাইরে সতর্ক পাহারায় থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে থামিয়ে বলেন, অফিস বন্ধ, ভেতরে কেউ নেই।
পরে ওই ইসি কর্মকর্তা কার্যালয়ের পাশে হোটেল ভিক্টোরিয়াতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি টেলিফোনে বিএনপির অফিস কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনার জন্য বিএনপিসহ ৪৪টি নিবন্ধিত দলের সাধারণ সম্পাদক বা মহাসচিবকে এই চিঠি দিচ্ছে ইসি।
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে শনিবার সকালে ও বিকালে দুই ভাগে ২২টি করে দলের সঙ্গে এই সভা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বরাবরে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৪ নভেম্বর বিকাল ৩টায় নির্বাচন কমিশন ভবনের সম্মেলন কক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী আবদুল আউয়ালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হবে। এতে আপনার দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক মনোনীত দুইজন প্রতিনিধিকে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার অনুরোধ জানিয়েছেন।
ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অন্তত ৪২টি মামলার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল গ্রেফতার হয়ে কারাগারে।
দলটির সিনিয়র নেতাদের বাসায় বাসায় তল্লাশি চলছে। সহিংসতা এড়াতে পল্টন কার্যালয় ঘেরাও করে রেখেছে পুলিশ। এমতাবস্থায় বিএনপিকে সংলাপের চিঠি দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে নির্বাচন কমিশনের।
নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, শনিবারের আলোচনা সভায় অংশ নিতে ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। চিঠিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথবা মনোনীত দুজন উপযুক্ত প্রতিনিধিকে আলোচনা অনুষ্ঠানে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আলোচনা অনুষ্ঠানটি নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সভায় সভাপতিত্ব করবেন। নির্বাচন কমিশনাররা সভায় উপস্থিত থাকবেন।