রাম বসাক, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ
শাহজাদপুর পৌর সদরের দ্বারিয়াপুর মহল্লার হাজী আবুসামার বৃক্ষ পাগল ছেলে শামীম হোসাইন। গাছের সাথেই বসবাস তার। কৈশোর থেকে যৌবনের প্রায় সবটুকু সময় খরচ করেছেন গাছের পিছনে। বাড়ির প্রবেশ পথ থেকে শুরু করে উঠান, বেডরুম এমনকি বাদ যায়নি বাথরুমও। সবখানে গাছ লাগিয়ে এলাকায় তাক লাগিয়েছেন ভীষণ ভাবে। ছোটবেলায় শুনেছিলেন ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যানের কথা। সেই কল্পনা থেকেই শুরু করেন বৃক্ষ রোপন। প্রায় দেড় যুগ টানা রোপণ করছেন গাছ। একাই পরিচর্যা করে সন্তানের মত দারুণ যত্নে লালন পালন করেন বাগান। ঢাকা,চট্টগ্রাম, রংপুর,দিনাজপুর সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছুটেছেন কেবল গাছ সংগ্রহ করতে। প্রায় দেড়যুগে সংগ্রহ করেছেন ক্যাকটাস, মানি প্লান্ট, বাগানবিলাস, পাতাবাহার, কাঠগোলাপ, শতমুল,ঝাউগাছ, তুলশী, গাঁদা,এ্যালোভেরা, কয়েন লিলি, পাথরচূরা,জবা,গোলাপ, হাসনাহেনা, মেঘ কুমারী, দুধ কম্বল, আঙুর,বাঁশ পামসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। আর সেগুলো রোপণও করছেন আশ্চর্য সব পাত্রে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডিমের খোসা, বৈদ্যুতিক বাল্ব, প্লাস্টিকের বোতল, ভ্যাকিউম টিউব, নারকেলের খুলি, সাবানদানি, টিনের কৌটা, ছাইদানি, খেলনা নৌকা, পারফিউমের বোতল সবকিছু ছাপিয়ে উপচে পড়ছে লিকলিকে বৃক্ষরাজি। আর এইসব অদ্ভুত পাত্রগুলো স্বর্গীয় শোভা সৃষ্টি করে শূন্যে ঝুলে আছে অবলীলায়। ধূলিময় যান্ত্রিক শহরের সমস্ত দূষণকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শামীমের আশ্চর্য বাগান যেন এক টুকরো স্বর্গ। বৃক্ষ প্রেমিক শামীমের এমন পাগলামি প্রথম প্রথম লোকজন সমালোচনা করলেও এমন আশ্চর্য সৌন্দর্যে এখন মুগ্ধ হতে শুরু করেছেন অনেকেই। সেইসাথে তার কার্যকলাপে অনুপ্রানিত হয়ে কেউ কেউ তো এমন করে গাছ লাগানো শুরু করেছেন ইতোমধ্যেই।