ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি: ফরিদপুর-১ আসনের (বোয়ালমারী-মধুখালী-আলফাডাঙ্গা) আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বোয়ালমারীতে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে বোয়ালমারী পৌরসদরের স্টেশন রোডের পাকঘর চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এ মতবিনিময় করেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার আব্দুর রহমান বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজ এখানে উপস্থিত নেই। তার সাথে আমার কথা হয়েছে। সভাপতি হিসেবে যে দায়িত্ব পালন করার কথা তা সে তা শুরু করেছে। আমরা সকলে মিলেই এই দলের নির্বাচনী কাজগুলো করছি। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর অনেক প্রার্থীর বাড়িতে গেছি, দেখা হয়েছে, শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে।
ফরিদপুর-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা অধিক সংখ্যক হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলে সহনশীলতা, অতিমাত্রায় উদারতা এবং অতিমাত্রায় গণতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চার সুযোগ থাকায় এত বেশি সংখ্যক মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, নতুন নেতৃত্বকে সামনে নিয়ে আসার জন্য দলীয়ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে নতুন নেতৃত্বের বিকাশ হতে হবে। তিনি আরো বলেন, সংগঠনগতভাবে বোয়ালমারীতে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো সবচেয়ে অন্য উপজেলার চেয়ে শক্তিশালী সংগঠন। বোয়ালমারীর রাজনৈতিক ইতিহাসে শক্তিশালী ছাত্রসংগঠন হয়ে ছাত্রলীগ গড়ে উঠেছে। যুবলীগের মধ্যে বিভাজন থাকলেও জেলা যুবলীগের প্রতি সকলেরই শ্রদ্ধাবোধ আছে। মৎস্যজীবী লীগও হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকলীগ খুব ভালো করছে। এভাবে নেতৃত্বের বিকাশ হবে। রাজনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হতে হবে। রাজনীতিতে আচার, আচরণ, চালচলন, কথাবার্তা, ব্যবহার, সংস্কৃতির একটা আলাদা মর্যাদা যদি থাকে তবে তার বিকাশ হবে। ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ আমার হাতে গঠন করেছি। সারা দেশে ৬০টি জেলা ইউনিট আছে। এর মধ্যে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ শ্রেষ্ঠ হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি পালটা প্রশ্ন করেন, নেত্রী যদি সবাইকেই নির্বাচনে দাঁড়াতে বলবেন তাহলে কেন দলের মনোনয়ন দিয়েছেন? তিনি যখন দলের সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডেকেছিলেন তখন তিনি অডিয়্যান্সকে বলেছিলেন ৪৭০০ মনোনয়ন প্রত্যাশী পেয়েছি, আর মনোনয়ন পাবে ৩০০ জন। এই ৩০০ মানুষ আপনারা ঠিক করেন। তখন হাউজ থেকে বলেছে; নেত্রী আপনার উপর দায়িত্ব দিলাম এটা আপনি ঠিক করে দেন। এরপর নেত্রী বলেছেন, আমি যদি ঠিক করে দেই আপনারা মানবেন? দুই হাত তুলে তখন সবাই বলেছেন আমরা মানবো। তাহলে যারা দলের মনোনয়ন পেয়েছে তাদেরকে সবাই মানবেন এটাই তো ঠিক। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে পারবেন না। যেখানে অন্যান্য দলের প্রার্থী থাকবে না সেখানে আওয়ামী লীগের ড্যামি প্রার্থী থাকবে। প্রতিদ্বন্দ্বীতায় কোন প্রার্থী না থাকলে ড্যামি প্রার্থী হবে। আর মতলববাজরা যারা নির্বাচন করতে চায়, তারা এটাকে একটা অজুহাত বানিয়েছে। অজুহাত দিয়ে নেত্রীর কথার ভুল ব্যাখ্যা বানিয়েছে। তিনি বলেন, ১৭ ডিসেম্বরের পরে যদি কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয় কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে দলে পদধারী নেতা হলে তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। আর যদি দলের পদধারী না হয় তার জন্য দলের দরজা সারা জীবনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে।
আব্দুর রহমান স্থানীয় একটি পত্রিকার প্রকাশক এবং এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনীত হওয়ায় মতবিনিময় শেষে সকল সাংবাদিক তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মীরদাহ পিকুল, পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র সেলিম রেজা লিপন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আকবর আলী, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু, দাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা।