রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক ভারসাম্যসহ নানা সমীকরণেই বাংলাদেশ এবার ব্রিকসের সদস্য হতে পারেনি বলে জানালেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তবে দ্বিতীয় ধাপে এই জোটে যুক্ত হওয়ার আশা করছে ঢাকা। সাউথ আফ্রিকায় ব্রিকসের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেয়ার পর দেশে ফিরে বোরবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ-কথা জানান সচিব।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দাওয়াতের উত্তরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, আমরা সেখানে যাব। আমরা যেকোনো ফরম্যাটে ব্রিকসে যোগ দিতে আগ্রহী। রাজনৈতিক এবং আঞ্চলিক অনেক ইস্যু আছে। যেমন- এখানে ব্যালান্স করার একটা ব্যাপার আছে। ল্যাটিন আমেরিকা থেকে একজনকে নিয়েছে আফ্রিকা থেকে নিয়েছে আবার নর্থ আফ্রিকা থেকে নিয়েছে। আবার মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নতুন করে আবেদন করার কিছু নেই। আমরা যোগাযোগে আছি।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, এই জোটের রাজনৈতিক সদস্য না হলেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সদস্য হিসেবে আছে। কারন ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক- এনডিবি’র অংশীদার বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, পলিটিক্যাল লেভেলে আপনারা বলতে পারেন এবার ছয়জনের মধ্যে ছিলাম না। ট্যাঞ্জিবেল আউটকামে দিকে যদি যাচাই করে দেখেন একমাত্র এনডিবি ছাড়া তেমন একটা চোখে পড়ে না। এনডিবির যেহেতু আমরা পার্ট সেহেতু এখানে আশাহত হওয়ার কেমন কিছু আমরা দেখছি না।
ডিসেম্বরের মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব ।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসার আমন্ত্রণে ২২ থেকে ২৪ অগাস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পঞ্চদশ ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। ৪০টিরও বেশি দেশ এবার ব্রিকসে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। এর মধ্যে ২২টি দেশ এই জোটে যোগ দেয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন করে।
বিশ্ব অর্থনীতির এক-চতুর্থাংশের নিয়ন্ত্রণকারী পাঁচ দেশের জোট ব্রিকসে যোগ দিতে শেষ পর্যন্ত যোদ দেয়ার আমন্ত্রণ পায় সৌদি আরব, ইরান, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া ও আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশ সদস্যপদ না পাওয়ায় দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে নানা আলোচনা রয়েছে।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের অর্থনৈতিক জোট ব্রিক এর প্রথম আনুষ্ঠানিক সম্মেলন হয় ২০০৯ সালে। পরের বছর দক্ষিণ আফ্রিকার যোগ দিলে জোটের নাম হয় ব্রিকস। এই জোটের উদ্যোগে ২০১৫ সালের ২১ জুলাই যাত্রা করে নিউ ডেভলেপমেন্ট ব্যাংক-এনডিবি।
২০২১ সালেই এনডিবিতে যোগ দেয় বাংলাদেশ। মূল জোটেও বাংলাদেশ যোগ দিতে চায়, সে কথা গত জুনে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের একথা জানিয়ে বলেছিলেন, এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও স্বীকৃতি। কিন্তু সদস্য পদ না পাবার পর তিনি একাত্তরকে জানান, বাংলাদেশ সদস্য পদের জন্য আবেদনই করেনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ফরমাল অ্যাপ্লিকেশন আমরা আগে করিনি। এতে যোগ দিলে লাভ কী লোকাসান কী সেটা আমরা পর্যলোচনা করছি। যারা এটা নিয়ে হইচই করছেন তারা একটু বাগাড়ম্বর করছেন।