দ্বিতীয় এলিজাবেথের বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয়েছে। এর ফলেই প্রায় সাত দশকেরও বেশি সময় পরে ব্রিটেনের মানুষ এখন নতুন একজনকে নারীকে ‘রাণী’ বলে ডাকবে। রাজা চার্লসের স্ত্রী, ডাচেস অফ কর্নওয়েল ক্যামিলাকে এখন থেকে ‘কুইন কনসোর্ট’ বলে সম্বোধন করা হবে। বছরের পর বছর ধরে বিতর্ক চলার পরে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের কারণে এই উপাধিটি নির্ধারিত হয়। ক্যামিলা এবং চার্লসের বিয়ের আগেই নির্ধারিত হয় এই উপাধি। যদিও এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল যে ৭৫ বছর বয়সী ক্যামিলাকে এই উপাধিটি দেয়া হবে। কিন্তু তাকে কোনও সার্বভৌম অধিকার ছাড়াই এই উপাধি দেয়া হবে।
ঐতিহ্যগতভাবে রাজার স্ত্রী হলেন ‘রাণী’। কিন্তু চার্লস রাজা হলে ক্যামিলার উপাধি কী হবে তা বছরের পর বছর ধরে একটি বড় প্রশ্ন ছিল। রাজতন্ত্রে তার অবস্থান সবসময়ই একটি সংবেদনশীল বিষয় ছিল। এর কারণ চার্লসের প্রাক্তন স্ত্রী প্রিন্সেস ডায়ানা ১৯৯৭ সালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান এবং চার্লসের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে রাজতন্ত্রে ক্যামিলার অবস্থান সবসময়ই একটি সংবেদনশীল বিষয় ছিল। প্রাসাদের কর্মকর্তারা বছরের পর বছর ধরে বলেছিলেন যে চার্লস রাজা হলে ক্যামিলাকে সম্ভবত ঐতিহ্যবাহী ‘রানী কনসোর্ট’ এর পরিবর্তে ‘রাজকুমারী কনসোর্ট’ উপাধি দেওয়া হবে।
রাজবাড়ির কর্মকর্তাদের মতে, ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে ‘প্রিন্সেস কনসোর্ট’ উপাধির কোনও উদাহরণ নেই। একই ধরনের উপাধি ‘প্রিন্স কনসোর্ট’ শুধুমাত্র একবার রানী ভিক্টোরিয়ার স্বামী অ্যালবার্টের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ যখন প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন যে তার ছেলে প্রিন্স চার্লস রাজা হলে ক্যামিলাকে ‘কুইন কনসোর্ট’ উপাধি দেওয়া হবে। এরপরেই এই আলোচনা শেষ হয়ে যায়।
১৯৫২ সালে রানির পদ আসীন হওয়ার পর টানা ৭০ বছর ব্রিটেনের রানি ছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। বাকিংহাম প্যালেস থেকে বৃহস্পতিবার জারি করা এক বার্তায় বলা হয়েছে, বালমোরে আজ বিকেলে প্রয়াত হয়েছেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। জুনেই বেশ ধুমধাম করে রানির ৭০ বছর ক্ষমতায় থাকা উদযাপন করা হয়েছিল। ২০১৫ সালেই প্রথম এলিজাবেথের রেকর্ড ভেঙে দ্বিতীয় এলিজাবেথ হয়ে যান সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা রানি।
বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন রানি। ভালোভাবে চলাফেরাও করতে পারতেন না। বৃহস্পতিবার তার শরীর হঠাত্ই খারাপ হয়ে যায়। পরিস্থিতি বুঝে বালমোরে ছুটে আসেন যুবরাজ চার্লস, রাজকুমারী অ্যান, উইলিয়াম, হ্যারি ও তাদের স্ত্রী। তার হাত ধরে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পদ বসেছেন মোট ১৫ জন।