মো.আহসানুল ইসলাম আমিন, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :
খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন আগামী রবিবার ২৫ ডিসেম্বর। রাত ১২ টা ১ মিটিটে প্রার্থনা মধ্য দিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড় দিন শুরু হবে। সকল মানুষের কল্যাণে প্রার্থনা করা হবে। বড় দিনকে ঘিরে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের শুলপুর খ্রিষ্টান পল্লীতে চলছে সাজসজ্জা আর ব্যাপক সব প্রস্ততি। অতিথি আপ্যায়নে কোন রকমের ক্রটি না রাখতে রাখা হচ্ছে রকমারী সব পিঠাপুলির আয়োজন। বাড়ির সামনে সাজানো হচ্ছে ক্রিস্টমাস ট্রি। অপেক্ষার দিনক্ষণ শেষ হতে বেশি সময় দেরি না হলেও জেলার একমাত্র খ্রিস্টান পল্লীর পরিবারগুলোতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখো গেছে,মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার শুলপুর গ্রামের “ সাধু যোশেফ গির্জায় “ সাজানো হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ঝলমলে আলোক সজ্জায়। গির্জার অভ্যন্তরের দৃষ্টিনন্দন ভাবে ডিসপ্লে করা হবে কুড়ে ঘরের অভ্যন্তরের মাদার মেরির কোলে যিশুখ্রিষ্টের প্রতিচ্ছবি। প্রার্থনা করতে আগত পূণ্যার্থীদের আগমন নিরবিচ্ছিন্ন করতে তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ ভলান্টিয়ার টিম। সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে চলছে মুন্সিগঞ্জ জেলার একমাত্র খ্রিস্টান পল্লী শুলপুর গ্রামে। উপজেলার ৩টি গ্রামের প্রায় ৩৫০টি টি পরিবারে উৎসব পালনের প্রস্থতি চলছে। এদিকে দিনটিকে জাঁকজমকভাবে ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মাধ্যমে পালনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এই খ্রিষ্টান পল্লী। চারিদিকে নানা রং-বেরংঙ্গে সাজিয়েছেন প্রত্যেকটি বাড়ি।
মুন্সিগঞ্জ জেলা খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নয়ন রোজারিও বলেন, পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে সার্বিক সহযোগিতা করছে বলেই আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি। তাছাড়া এ উপজেলায় অন্যান্য ধর্মাবলম্বী লোকজন আমাদের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অনুষ্ঠানকে আরো মুখর ও প্রাণবন্ত করে তুলবে।
তিনি জানান ,এ দিনটিকে কেন্দ্র করে খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের মধ্যে অনেকের বিয়ের আয়োজন করা হয়। যে কারণে এই দিনকে কেন্দ্র করে সব আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতিও থাকে অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। নির্বিঘ্নে ধর্মীয় ও অন্যান্য উৎসব পালনের জন্য নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
সাধু যোশেফ গির্জার ফাদার লিন্টু ফ্রান্সিস ডি কস্তা বলেন, বড় দিন উদযাপনে আমাদের প্রার্থনা থাকবে দেশে দেশে যেন শান্তি বিরাজ করে এবং দেশের খ্রিস্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আমার বিশ্বাস। যীশু মানুষকে দেখিয়েছেন মুক্তি ও কল্যাণের পথ। যীশু খ্রিস্টের জন্মতিথি সবার মাঝে হানাহানি আর বৈষম্য দূর করবে। মানুষে-মানুষে শান্তি স্থাপনের বারতা নিয়ে এবারের বড়দিন উদযাপন করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)এ, কে,এম মিজানুল হক জানান, শুলপুর গ্রামের খ্রিষ্টান ধর্মাবলীদের সাথে আমি দেখা করেছি, নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়ে গির্জার ফাদার এবং খ্রিস্টান ধর্মপল্লির লোকজনের সাথে কথা বলেছি। তাদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবকে যথাযথ ভাবে পালনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে গীর্জা ও আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তার জন্য পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। এক কথায় আমরা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি ।