আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী);-
‘ভবিষ্যতে আমিও এমপি মন্ত্রী হতে পারি’ বলে উল্লেখ রাজশাহী সিটিমেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে শালীনতা বিবর্জিত পত্র দিয়েছেন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান।
এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে শালীনতা বিবর্জিত এমন পত্র লেখায় রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে শোকজড করেছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর চিঠিটি দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ।
এতে উল্লেখ করা হয়, আপনার চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, আপনি জনাব হাবিবুর রহমান চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী এর বিরুদ্ধে সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়রকে এ উদ্দেশ্য করে একটি পত্র লিখেন, যা নিম্নরূপঃ “আপনার সঙ্গে আমাকে দেখা করার জন্য গেটে অপেক্ষা করতে হবে আপনার কাছে সময় চাইতে হবে? বিষয়টি কল্পনা করা আমার জন্য দুরহ। আপনি জানেন কি আমার শাশুড়ি এমপি। আমার আওয়ামী পরিবারের জন্ম। ভবিষ্যতে আমিও এমপি বা মন্ত্রী হতে পারি। গাজীপুর ও রাজশাহীর কাটাখালির পৌর মেয়রদের দিকে তাকান। বর্তমানের তাঁদের কি অবস্থা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে আরও বলা হয়, একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রতি উদাসীন এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আপনার ধরণের মন্তব্য একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা, ২০১৮ এর পরিপন্থি।
এই অবস্থায় চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে আনীত উপযুক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।
জানা যায়, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করা হয়। এর পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ জোহরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহীর চেয়ারম্যান, হাবিবুর রহমান রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র-কে উদ্দেশ্য করে একটি পত্র লিখেন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও বর্তমানে প্রতিমন্ত্রীর মর্যদা স্বম্পন্ন ব্যক্তি। তাছাড়া তিনি বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় সরকারী কর্মচারীর নিকট থেকে এ ধরণের পত্র অবলোকন করেননি। শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান সম্মানজনক পদে অধিষ্ঠিত থেকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রতি উদাসীন এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্ত্রব্য দিয়ে এহেন পত্র লেখন চরম অসদাচরন মর্মে প্রতিয়মান হওয়া। ফলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয়/আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন হতে বিবেচ্য পত্রে অনুরোধ করা হয়।
এমতাবস্থায়, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পত্রের আলোকে হাবিবুর রহমান, চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহীর বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, আমি এই ধরনের কোনো চিঠি মেয়রকে দেয়নি। চিঠিটি কিভাবে গেল তা আমি জানি না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শোকজড নোটিশটিও আমি হাতে পাইনি। পেলে জবাব দিবো।