সিলেট প্রতিনিধিঃ- হাফিজুল ইসলাম লস্কর:
(১৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টায় সিলেট দরগাহ গেইটস্থ শহীদ সোলেমান হলে শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানি রহ. বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে- হুসাইন আহমদ মাদানি রহ. এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কানাইঘাট উপজেলা জমিয়তের সভাপতি শফিকুল হক সুরাইঘাটি ও কোম্পানীগঞ্জ জমিয়তের সভাপতি আব্দুল মুছাব্বিরের সভাপতিত্বে ও মাওলানা এবাদুর রহমান, মুহাম্মদ আলী, মাসুদ আজহার, বাহাউদ্দিন বাহার ও নাজিম উদ্দিনের যৌথ পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় জমিয়তের সহ-সভাপতি এডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী বলেন, হুসাইন আহমদ মাদানি রহ. ছিলেন ভারত বর্ষের স্বাধীনতার অগ্রসেনা। জমিয়তে উলামার পুরোধা ছিলেন। তাকে বাদ দিয়ে ভারতবর্ষ স্বাধীন হবার কোনো সুযোগ ছিল না। তার অসামান্য শ্রম ও অবদানে ভারতবর্ষ হয়েছে ব্রিটিশমুক্ত, ১৯০ বছরের পরাধীনতার জিঞ্জির ভেঙে দিয়ে স্বাধীনতা এনেছেন যার ধারাবাহিকতায় আমরাও (বাংলাদেশ) স্বাধীন হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, হুসাইন আহমদ মাদানি রহ.কে নিয়ে যে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে তথাকথিত ইসহাক মাদানী, তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করি। আজ যখন সব বাতিলরা সংঘবদ্ধ হয়েছে, এই মুহুর্তে আমরা যারা মাদানী রহ. এর সৈনিক দাবী করি, আমরা অত্যন্ত সাহসীকতার সাথে তার চিন্তাচেতনা নিয়ে পরিচয় বহন করতে হবে, কোনো সংকুচিত হব না। আমরা যদি মাদানি রহ. এর ইতিহাস পড়ি, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ইতিহাস পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখতে পাবো মাদানী রহ. এর সূর্য সন্তান ১৯৪৭ সালে ভারত দ্বিখণ্ডিত হবার পর পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন জাফর আহমদ রহ., ঠিক তেমনিভাবে পশ্চিম পাকিস্তানে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন শাব্বির আহমদ উসমানী রহ.।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় জমিয়তের সহকারী মহাসচিব শায়খুল হাদীস আতাউর রহমান কোম্পানিগঞ্জী বলেন, শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানি রহ. এর বিচক্ষণতা ও ভবিষ্যৎবাণী এখন ফলেছে। তিনি বলেছিলেন ভারত দ্বিখণ্ডিত হলে পাকিস্তানে হবে ইসলাম নির্যাতিত ও ভারতে হবে মুসলিমরা নির্যাতিত, দ্বীনে মিল্লাতের কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। আজ তাঁর প্রত্যেকটি কথা কাটায় কাটায় মিলছে।
অপরপক্ষে নতুন করে ইসহাক মাদানি শায়খুল ইসলাম মাদানি রহ.কে নিয়ে করুচিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছে, স্পষ্টভাবে চ্যালেঞ্জ করছি, ভারতবর্ষের স্বাধীনতায় মওদুদীর কোনো অবদান ছিলোনা যেমনিভাবে বাংলাদেশের ‘৭১ এর স্বাধীনতায় মওদুদীবাদীদের কোনো অবদান নেই। নতুনভাবে ছলচাতুরী না করে মওদুদীর সঠিক ইতিহাস ও মওদুদীবাদীর অবদান কি তা নিয়ে আলোচনায় আসুন, আর আমরা নিয়ে আসবো শায়খুল ইসলাম সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি রহ. জীবনি। আর যদি সাহস না করতে পারেন, তাহলে মানুষকে মাদানি রহ.কে নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
বক্তারা আরো বলেন, শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানি রহ. ছিলেন একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞ মুহাদ্দিস, ইসলামী চিন্তাবিদ ও দূরদর্শী ও হক-হক্কানিয়তের পক্ষে স্রোতের বিপরীত চলা এক মর্দে মুজাহিদ। ছিলেন মুসলিম উম্মাহর দরদী এক রাহবর, গোটা ভারতবর্ষের অদূরদর্শী এক অভিভাবক। তিনি ছিলেন শায়খুল আরব ওয়াল আজম, দ্বীনে মিল্লাতের প্রত্যেক লাইনে যার রয়েছে অসামান্য শ্রম ও অবদান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন গোয়াইনঘাট উপজেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা গোলাম আম্বিয়া কয়েছ। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জমিয়তের সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান সিদ্দিকী, প্রকাশনা সম্পাদক মখলিছুর রহমান রাজাগঞ্জী, সদস্য শায়খ সাইফুল্লাহ ও নূর আহমদ কাসেমী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক লেখক ও গবেষক মাহবুব সিরাজী, ড. মাও. জিয়াউর রহমান, কবির আহমদ, সুহেল আহমদ ও ইয়াহইয়া খান প্রমুখ।