ইসমাইল আশরাফ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ তিস্তা নদীর উজানে ভারতের সিকিমের একটি বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। ফলে প্রবল বেগে উজান থেকে বিপুল পরিমাণে পানি তিস্তা নদী দিয়ে দ্রুত নেমে আসতেছে এবং ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় তিস্তা নদীর তীরে অবস্থানরত লালমনিরহাট জেলার সকল নাগরিককে সতর্ক অবস্থানে থাকার জন্য অনুরোধ করেছে জেলা প্রসাশন। বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি হিসেবে দেখছে লালমনিরহাট জেলা প্রসাশন সহ তিস্তা নদী তীরবর্তী অন্যান্য জেলাগুলি।
জানা গেছে, তিস্তা নদীর ভারত অংশে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় হু হু করে তিস্তার জল এগিয়ে আসছে ,বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কায় প্রশাসনের সতর্কবার্তা জারি।
আজ মঙ্গলবার (৪ঠা অক্টোবর) সকাল ০৯টায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড দেশের নদ নদীর পানির সমতল সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন (cwc) বরাত দিয়ে জানায়, ভারতের সিকিম রাজ্যে তিস্তা নদীর উপর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্থ হবার কারনে তিস্তা নদীর পানি সমতল অংশে অস্বাভাবিক হারে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী গতকাল মধ্যরাতে গজল ডোবা অংশে ২৮৫ সিন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়, (বর্তমান পানির সমতল ১১০সেন্টিমিটার) এবং দোমোহনী পয়েন্টে অদ্য সকালে ৮২ সেঃমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে,(বর্তমান পানি সমতল ৮৫ পয়েন্ট ৯৫ সেন্টিমিটার) যা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়।
লালমনিরহাট জেলার দোয়ানী তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে দিন দিন,বর্তমানে তিস্তা নদীর পানি বিপদ সীমার ৮০সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।ভারত অংশে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় উজানের পানি যে কোন মুহুর্ত্যে ঢুকে পড়বে এবং তা বিপদ সীমার ৫০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হবার আশংকা করছেন কতৃপক্ষ।
তিস্তার পাহাড়ি ঢল নেমে আসলে বাংলাদেশ অংশে লালমনিরহাট,কুড়িগ্রাম,রংপুর,নীলফামারী,গাইবান্ধা
জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবার সম্ভবনা রয়েছে এবং বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে ভারতের সিকিমে বাঁধ ভাঙ্গার পাশাপাশি ভারি মাত্রায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে,ভারতের আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মতে আগামী ৪৮ঘন্টায় ভারি বৃষ্টিপাত সম্ভবনা থাকায় পানি বৃদ্ধির সম্ভবনা রয়েছে,ফলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হবার সম্ভবনা রয়েছে।
তিস্তা নদীর দুপারে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ও বন্যার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায়, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে , হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ, আদীতমারী, পাটগ্রাম, লালমনিরহাট সদর
উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে মাইকিং করে সতর্কবার্তা পৌছে দিয়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকায়। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদউল্লাহ এই প্রতিবেদক কে জানান আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি যাতে মানুষের জান মাল রক্ষা করা যায়, সে বিষয়ে উপজেলা প্রসাশন সহ ইউনিয়নের সকল নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তায় কাজ করে যাচ্ছি আমরা। পাশাপাশি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এবিষয়ে টিমভিত্তিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জেলা প্রসাশন নিশ্চিত করেছে।