কোথাও কচুরিপানা বা মশার প্রজননক্ষেত্র পেলে কোনো ব্যক্তি এবং সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে মামলা দেওয়া হবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ এ নগর ভবনের অডিটোরিয়ামে কিউলেক্স মশার প্রকোপ-নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল বলেন, ঢাকা শহরের কোনো জায়গা কিন্তু মালিক ছাড়া নেই। ঢাকার প্রতিটি জায়গা হয় ব্যক্তি মালিকানাধীন অথবা কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের অধীন। অতএব মালিক বা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের জায়গা ও জলাশয় পরিষ্কার করতে হবে। আমি সবাইকে সাত দিন সময় দিচ্ছি। সাত দিন পর আমি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবো। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালাবেন। কোথাও কচুরিপানা বা মশার প্রজননক্ষেত্র পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মশার প্রজননক্ষেত্র পেলে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দেওয়া হবে না। নিয়মিত মামলা দেওয়া হবে। সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমি সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছি এয়ারপোর্টের পার্শ্ববর্তী খাল, জলাশয় ও ডোবাগুলোতে মশার চাষ হচ্ছে। এগুলো সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য সংস্থার অধীন। জলাশয়গুলোতে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা। এই কচুরিপানা পরিষ্কার না করলে আমরা সিটি কর্পোরেশন থেকে যতই মশার ওষুধ দেই না কেন মশা নিধন করা সম্ভব না। সবাইকে নিজেদের খাল, জলাশয় ও ডোবা পরিষ্কার করতে হবে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব নিতে হবে।
মেয়র মো. আতিকুল বলেন, শুধু কিউলেক্স মশা নয়। এডিস মশাও এখনো রয়েছে। আমাদের মশক নিধন কার্যক্রম ও অভিযান চলমান। দুই ভবনের মাঝখানে খালি জায়গায় অনেকে ময়লা ফেলে দেন। দয়া করে এটি বন্ধ করুন। স্থানীয় জনগণ ও হাউজিং সোসাইটির উদ্যোগে এগুলো বন্ধে কাজ করুন। অনেক হাউজিং সোসাইটি মশার ওষুধ ছিটানোর মেশিন কিনেছেন। আমরা সেসব সোসাইটিকে ডিএনসিসি থেকে বিনামূল্যে মশার ওষুধ সরবরাহ করবো।
তিনি বলেন,বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ও অন্যান্য ভবনের পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সরাসরি বৃষ্টির পানি নামার সারফেস ড্রেনে দিয়ে শহরের খাল ও জলাশয় দূষণ করছে। আমরা বার বার বলেছি প্রতিটি ভবনে অ্যাট সোর্সে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। গুলশান, বনানী, নিকেতন ও বাড়িধারা এলাকায় আমাদের বর্জ্যবিভাগ থেকে ইতোমধ্যে সমীক্ষার কাজ সম্পন্ন করেছে। আগামী ৪ জানুয়ারি এসব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। সারফেস ড্রেনে পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি মেয়রের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, ডিএনসিসির মশক নিয়ন্ত্রণ স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান প্রমুখ।