তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মকবুল হোসেনকে ‘জনস্বার্থে’ রোববার অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। এ অবসরের বিষয়ে সোমবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
কেন তাকে অবসরে পাঠানো হলো— এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মকবুল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমি জানি না আমাকে কেন অবসরে পাঠানো হলো। মানুষকে ফাঁসি দিলেও তো একটা ট্রায়াল হয়। কিন্তু আমি জানি না কোন কারণে এ সিদ্ধান্ত।
চাকরিজীবনে নীতিনৈতিকতার বাইরে কোনো কাজ করেননি বলে দাবি করেছেন সরকারি নির্দেশে অবসরে যাওয়া এ তথ্যসচিব।
তিনি বলেন, আমি কোনো দিন নীতিনৈতিকতার বাহিরে কোনো কাজ করিনি। যতদিন বেঁচে আছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই বেঁচে থাকব। তিনি আরও বলেন, আমার অবসর সরকারের সিদ্ধান্ত। নিয়মের মধ্যেই সব হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে দেখা করায় তার বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা লন্ডনে গিয়েছিলাম মার্চে, একটা টিম নিয়ে। আমাদের প্রেসের দায়িত্বে আছেন আশিকুন্নবি। তার কাছে জিজ্ঞাসা করলে পরিষ্কারভাবে বিষয়টি জানা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, প্রবাদে আছে, হাতি যখন কাদায় পড়ে, চামচিকাও লাথি মারে। আমি মার্চে লন্ডন গিয়েছিলাম। এই অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলেও সেটা তো মার্চ মাসে হয়েছে। আজ তো অক্টোবর। এতদিন এই প্রশ্ন আসেনি কেন? আমি তারেক রহমানকে কোনোদিন দেখেছি বলে মনে পড়ে না এবং তারেক রহমানকে দেখার ইচ্ছাও আমার নেই।
অভিযোগ বিষয়ে মকবুল হোসেন আরও বলেন, আপনাদের তো জানার অনেক পথ আছে। এ ধরনের কোনও বিষয় যদি আপনাদের নলেজে আসে এবং সেটা যদি বস্তুনিষ্ঠ হয়, অবশ্যই তা পত্রিকায় প্রকাশ করবেন। আমি বাংলাদেশের যেখানেই থাকি আমাকে এই প্রশ্ন করবেন যে আপনি লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেছেন কি না। ওমুক জায়গায় বিএনপির লোকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কিনা বা আপনার সংযোগ বিএনপির সঙ্গে আছে কিনা। শুধু আজ বা কাল নয়, কোনও সময় যদি এমন কোনও সংযোগ আমার সঙ্গে পান, আমাকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন।
মকবুল হোসেন বলেন, তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তার বয়স যখন ৯ বছর, তখন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন। এ ছাড়া তার নিজের বাড়িতে ছয়জন মুক্তিযোদ্ধা আছেন। তার ভাই মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। বাকি জীবনেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে চলবেন তিনি।
এর আগে রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন (৫৫১৪)-কে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা ৪৫ অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি হতে অবসর প্রদান করা হলো।’
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সোমবার তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কাল দেখেছি। কী কারণ, এটি আমি জানি না। অন্তর্নিহিত কারণ জানি না। এটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলতে পারে।’