যাত্রী সংকটে লোকসানের মুখে বরগুনা-ঢাকা নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মালিকপক্ষ। মঙ্গলবার ঢাকা থেকে বরগুনায় কোনো লঞ্চ যায়নি। সবশেষ সোমবার বিকেল ৪টায় বরগুনা লঞ্চঘাট থেকে একটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
এম কে শিপিং লাইনসের বরগুনা নৌবন্দরের ব্যবস্থাপক মো. এনায়েত হোসেন লঞ্চ চলাচল বন্ধের কথা জানান।
এনায়েত হোসেন বলেন, সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা বরগুনা লও রুটে লাঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিক কর্তৃপক্ষ।
পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ লঞ্চ চলাচল বন্ধ করায় দুর্ভোগে পড়েছেন ঘাটে আসা যাত্রীরা। তারা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বরগুনা থেকে ঢাকায় কম সময়ের মধ্যে কম ভাড়ায় যাওয়া যায়। ঢাকা-বরগুনা রুটে স্থলপথে বাস ভাড়ার চেয়ে লঞ্চে ভাড়া অনেক বেশি। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও বাজে সার্ভিসের কারণে লঞ্চে যাত্রী সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এম কে শিপিং লাইনসের বরগুনা ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. এনায়েত হোসেন জানান, গত কয়েক মাস ধরেই বরগুনা ঢাকা নৌ রুটে যাত্রী সংকট দেখা দেয়। এতে লোকসান গুনতে হয় মালিক কর্তৃপক্ষকে।
তিনি বলেন, প্রথমে ঢাকা-বরগুনা রুটে প্রতিদিন বরগুনা এবং ঢাকা থেকে দুটি লঞ্চ চলাচল করতো। যাত্রী সংকটের কারণে পরবর্তীতে আমরা একটি লঞ্চ চালানোর সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু এখন আর সেটিও চালানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ কোম্পানি কিছুতেই লোকসান দিয়ে ব্যবসা করবে না।
বরগুনার ঢলুয়া ইউনিয়নের বড়ইতলা এলাকা থেকে লঞ্চযোগে ঢাকা যেতে এসেছিলেন আব্দুল মোমেন মিয়া। তিনি বলেন, হঠাৎ করেই লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমি দুর্ভোগে পড়েছি , আমি আমার অসুস্থ মাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় লঞ্চে করে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। এখন সড়কপথে যেতে আমার খুবই কষ্ট হবে।
এ রুটের চলাচলকারী লঞ্চের মালিকরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালুর আগে এই পথে চলাচলকারী প্রতিটি লঞ্চে বরগুনা নদীবন্দর ঘাট থেকেই প্রতিদিন ৪০০-৫০০ যাত্রী পাওয়া যেত। কিন্তু সেতু চালুর পর ১০০ জন যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না।
নদীবন্দর সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার বিকেলে বরগুনা নদীবন্দর থেকে ৮০-৯০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় এমভি রাজহংস-৮ লঞ্চ। পরে সেটি কাকচিড়া ও ফুলঝুড়ি ঘাট থেকে আরও প্রায় ৫০ জন যাত্রী নেয়। আগে এই ২ ঘাট থেকে ২০০-২৫০ জনের মতো যাত্রী উঠত।
নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, শুনেছি যাত্রী সংকটের কারণে লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু অফিসিয়ালি লঞ্চ মালিকদের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।