বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দৌড়ে যুক্তরাজ্যকে পেছনে ফেলে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে ভারত। ফলে ষষ্ঠ অবস্থানে নেমে গেছে ব্রিটিশরা, যা লন্ডন সরকারকে বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে আরও চাপের মধ্যে ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্লুমবার্গের বরাতে শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) জিডিপি পরিসংখ্যান বলছে, ভারত ২০২১ সালের শেষ তিন মাসে যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। মার্কিন ডলারের ওপর ভিত্তি করে এ হিসাবে দেখা যায় ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে ব্যবধান আরও বাড়িয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে যুক্তরাজ্যের পতন দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পটভূমি সৃষ্টি করেছে। আগামী সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বরিস জনসনের উত্তরসূরী বেছে নেবেন কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা। যেখানে সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাককে হারিয়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস জয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে বিজয়ী যে-ই হোন না কেন, চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি এবং মন্দার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির সম্মুখীন একটি দেশ পরিচালনার ভার নিতে হবে তাকে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের ধারণা, এই মন্দা অন্তত ২০২৪ সাল পর্যন্ত চলতে পারে।
বিপরীতে, ভারতের অর্থনীতি এ বছর সাত শতাংশের বেশি বাড়ার পূর্বাভাস রয়েছে। শেষ তিন মাসে ভারতীয় শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াতে দেখা গেছে এবং এমএসসিআই উদীয়মান বাজার সূচকে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। এক্ষেত্রে কেবল চীনের পেছনে রয়েছে ভারত।
সমন্বয়ের ভিত্তিতে এবং সংশ্লিষ্ট প্রান্তিকের শেষ দিনে ডলারের বিনিময় হার ব্যবহার করে হিসাব করলে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ, অর্থাৎ প্রথম প্রান্তিকে ‘নামমাত্র’ নগদ অর্থে ভারতীয় অর্থনীতির আকার ছিল ৮৫ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার। একই ভিত্তিতে ও সময় যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির আকার ছিল ৮১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।
যুক্তরাজ্য এরপর থেকে সম্ভবত আরও নিচে নেমেছে। এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে নগদ অর্থের হিসাবে দেশটির জিডিপি মাত্র এক শতাংশ বেড়েছে, কিন্তু মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করলে তা উল্টো ০.১ শতাংশ সংকুচিত হয়। চলতি বছর মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার তুলনায় ব্রিটিশ পাউন্ডের পারফরম্যান্সও ছিল দূর্বল। এসময়ে রুপির বিপরীতে আট শতাংশ দর হারিয়েছে স্টার্লিং পাউন্ড।
আইএমএফ তার পূর্বাভাসে বলছে, ডলারের শর্তে বর্ষিক হিসাবে এ বছর যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে এশিয়ার পাওয়ারহাউজ ভারত। ভারতের সামনে থাকছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও জার্মানি। এক দশক আগেও বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিগুলোর মধ্যে ১১তম ছিল ভারত, অথচ যুক্তরাজ্য ছিল পঞ্চম।