জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাও জি চিউকে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে তাকে কঠিন তোপের মুখে পড়তে হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে টিকটিক জাতীয় নিরাপত্তায় ঝুঁকি তৈরি করছে বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে দেশটি। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক আইনপ্রণেতা দেশটিতে টিকটক নিষিদ্ধ করার পক্ষে। ফলে টিকটকের সার্বিক কার্যক্রম ব্যাখ্যা করতে হাজির হয়েছিলেন চিউ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকটকের সিইওকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করা হয়েছে। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় পক্ষের নেতারাই তাকে আক্রমণ করেছেন। যদিও টিকটকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই শুনানি ছিল রাজনীতিবিদদের এক ধরনের শো-অফ।
এদিন ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান নানেট ব্যারাগান টিকটকের সিইওর কাছে জানতে চান, তার সন্তানেরা টিকটক ব্যবহার করে কি না। জবাবে চিউ বলেন, তারা সিঙ্গাপুরে থাকে। সেখানে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকটক ব্যবহারের সুযোগ নেই। তার সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকলে তিনি ব্যবহার করতে দিতেন।
শুনানিতে চিউ ‘প্রজেক্ট টেক্সাস’ নামের একটি চুক্তির কথা বলেন, যার মাধ্যমে মার্কিন ফার্ম ওরাকল যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত ডেটা সংরক্ষণ করবে। কিন্তু প্রজেক্ট টেক্সাস চুক্তি পুরোপুরি মানা হয় না। চিউ স্বীকার করেন, যুক্তরাষ্ট্রের ডেটায় চীনের বাইটড্যান্স প্রকৌশলীরা প্রবেশ করতে পারেন। এই স্বীকারোক্তির পর মার্কিন আইনপ্রণেতারা প্রশ্ন তোলেন, চীনা প্রকৌশলীরা যদি মার্কিন ডেটায় প্রবেশ করতে পারেন, তাহলে চীন সরকার ডেটায় প্রবেশ করবে না তা বিশ্বাস করা কঠিন।
টিকটকের মালিক চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্স। চিউ এক সময় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ছিলেন। শুনানিতে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি বাইটড্যান্স শেয়ারের মালিক কি না। আইনপ্রণেতাদের চাপের মুখে তিনি শিকার করেন, তার শেয়ার রয়েছে। তবে তা কমানোর চেষ্টা চলছে।
টিকটকের একজন মুখপাত্র বলেন, অন্তত ১৫ কোটি মার্কিন নাগরিকের পছন্দের প্ল্যাটফর্ম টিকটক। এর সঙ্গে অন্তত ৫০ লাখ ব্যবসা এবং এসব ব্যবসার সঙ্গে মানুষের জীবিকা জড়িত।