প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ রাফাহ সীমান্ত এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলায় এক সেনা আহত হওয়ার পরই গাজায় ব্যাপক পাল্টা হামলার নির্দেশ দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এর মধ্য দিয়েই কার্যত যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করল ইসরায়েল।
এদিকে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডস। তারা এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর এই আগ্রাসন শান্তিচুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এটি ‘বিপজ্জনক উস্কানি’।
একই সঙ্গে হামাস জানায়, নিখোঁজ এক ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া তারা আপাতত স্থগিত রাখছে। বিবৃতিতে সংস্থাটি সতর্ক করে বলে, ইসরায়েল বড় ধরনের উস্কানি দিলে গাজার ভেতরে মৃতদেহ উদ্ধারের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে এবং বাকী ১৩ জন জিম্মির মরদেহ উদ্ধারও বিলম্বিত হতে পারে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ আলজাজিরাকে জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে উত্তর গাজার সাবরা পাড়ায় একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় চারজন নিহত হন। দক্ষিণ খান ইউনিসে আরও পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হন। এছাড়া রাফাহ, দেইর আল-বালাহ ও গাজা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ও গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।
হামলাগুলোতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার চিকিৎসা সূত্র। গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের পাশেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, গাজার আকাশে একাধিক যুদ্ধবিমান ও ড্রোন উড়তে দেখা গেছে, যা সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
তবে হামাস জানিয়েছে, রাফাহ সীমান্তে সংঘটিত ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বরং তারা এখনো যুদ্ধবিরতির সব শর্ত মেনে চলছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্স বলেছেন, যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর আছে। তবে এর মানে এই নয় যে কোথাও ছোটখাটো সংঘর্ষ হবে না। গাজায় হামাস বা অন্য কেউ একজন ইসরায়েলি সৈন্যের ওপর হামলা চালিয়েছে, এটা আমরা জানি। ইসরায়েল নিশ্চয়ই জবাব দেবে, তবুও আমি বিশ্বাস করি, সামগ্রিকভাবে শান্তি টিকে থাকবে।
গাজায় নতুন করে এই সহিংসতা শুরু হওয়ায় আবারও উত্তেজনা বেড়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। ফিলিস্তিনি অধিবাসীরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলের এই হামলা তাদের নিরাপত্তা ও মানবিক পরিস্থিতিকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলছে।