শুরুতে একটি হলুদ কার্ড মানে সতর্ক হয়ে যাও। নইলে সামনে বিপদ। সেটা গায়ে না মেখে ফুটবলাররা যদি গোয়ার্তুমি করেই যান, তবে ফের হলুদ কার্ড দেখাতে বাধ্য হন রেফারি। আর দুই হলুদ কার্ড-এক লাল কার্ডের সমান। অর্থাৎ একই ম্যাচে দুটো হলুদ কার্ড দেখার সঙ্গে সঙ্গেই মাঠ ছাড়তে হয় ফুটবলারকে।
তবে ইউরোপা কনফারেন্স লিগে দেখা গেল ভিন্ন দৃশ্য। একই ম্যাচে দুটি হলুদ কার্ড দেখার পরও মাঠ ছাড়তে হয়নি অ্যাস্টন ভিলার গোলরক্ষক আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে। ইউরোপিয়ান ফুটবলের তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতাটির কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি লেগে লিলের বিপক্ষে অ্যাস্টন ভিলা ম্যাচে ঘটে এই ঘটনা।
ম্যাচে টাইব্রেকারে লিলেকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে ভিলা। এই ম্যাচেও আরেকবার মার্তিনেজ প্রমাণ করেছেন তিনি গোলবারের প্রাচীর। তাকে পরাস্ত করে পেনাল্টি শুটআউটে গোল করা সহজ নয়। দুটি শট ফিরিয়ে ভিলাকে তুলেছেন সেমিফাইনালে। সেই জয় উদযাপনের আগে অবশ্য তিনি দেখেছেন দুটি হলুদ কার্ড।
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী ৩১ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক ম্যাচের ৩৯ মিনিটে সময় নষ্টের কারণে দেখেছিলেন প্রথম হলুদ কার্ড। রেফারির এই সতর্কতা হয় মনে রাখেননি তিনি, অথবা আইনের ফাঁকফোকর ভালোই জানা তার। নয়তো টাইব্রেকারে বেনতালেবের শট ফিরিয়ে অতিরিক্ত উদযাপনে মেতে উঠতেন না তিনি। লিলের সমর্থকদের লক্ষ্য করে ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে চুপ থাকতে বলেন। যা অপমান করার সমতুল্য বলে মনে করা হয়। আর তাই তাকে দেখতে হয় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড।
রেফারি ইভান ক্রুজলিয়াক ফের তাকে হলুদ কার্ড দেখালে মাঠ ছাড়াটাই স্বাভাবিক ছিল। মার্তিনেজের দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের পর ভিলার খেলোয়াড় ও সমর্থকরা উদ্বিগ্ন হয়ে যান। কারণ তখনও বাকি ছিল চারটি শট। এই আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক থাকা মানেই যে নিশ্চিন্ত। শেষ পর্যন্ত মার্তিনেজকে মাঠ ছেড়ে যেতে হয়নি। গোলবারে দাঁড়িয়েই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।
তবে ম্যাচ শেষে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই গেছে। দুই হলুদ কার্ড দেখার পরেও কেন মাঠ ছাড়লেন না তিনি। কোন ক্ষমতায় থেকে গেলেন মাঠে? আসলে সবসময় দুই হলুদ কার্ড মানেই লাল কার্ড নয়। না জানা এক নিয়মের কারণেই মার্তিনেজকে মাঠ ছাড়তে হয়নি।
মার্তিনেজ মূলত মাঠে টিকে যান আন্তর্জাতিক ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের একটি আইনের কারণে। ১০ নম্বর আইনে বলা হয়েছে, ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে দেখা হলুদ কার্ড টাইব্রেকার অবধি হিসেব করা হয় না। নির্ধারিত ৯০ মিনিট বা অতিরিক্ত সময়ের শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয়ে যায় সে হিসেব। তাই নির্ধারিত সময়ে হলুদ কার্ডের টাইব্রেকারে দেখা দ্বিতীয় কার্ডটি হিসেবে ধরা হয় না। আর তাই এমন কার্ড দেখা কোনো ফুটবলারকে মাঠ ছাড়তে হয় না।
আর এই নিয়মেই বেঁচে গেছেন এমি মার্তিনেজ। ছাড়তে হয়নি মাঠ। তাই বাকি শটগুলোতেও ছিলেন মাঠে। দুটো শট ফিরিয়ে জিতিয়েছেন দলকে।