বাংলাদেশে অপুষ্টির শিকার শিশুদের জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে এই রমজানে ইউনিসেফ একটি বড় আকারের প্রচারাভিযান শুরু করছে। প্রথমবারের মতো দেশে তহবিল সংগ্রহের এই প্রচারাভিযানের মাধ্যমে আরও বেশি অনুদান দিতে সক্ষম ক্রমবর্ধমান সচ্ছল মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রতি আবেদন জানাচ্ছে সংস্থাটি।
ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইউনিসেফের তহবিল সম্পূর্ণভাবে স্বেচ্ছায় দানের ওপর নির্ভরশীল। সংস্থাটি বাংলাদেশে ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিশুদের জীবন বাঁচাতে ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করছে। বিশ্বব্যাপী ইউনিসেফ অন্য যেকোনো মানবিক সংস্থার চেয়ে বেশি সংখ্যক শিশুর জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছে। রমজানে দেশজুড়ে অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের জন্য ইউনিসেফের তহবিল সংগ্রহের এই প্রচারাভিযান।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, অপুষ্টির সবচেয়ে সাধারণ ধরন হল ‘স্টান্টিং’ বা খর্বাকৃতির (বয়সের তুলনায় কম উচ্চতা) হওয়া অথবা ‘ওয়েস্টিং’ বা শীর্ণকায় (উচ্চতার তুলনায় কম ওজন) হয়ে যাওয়া। অপুষ্টি মোকাবিলায় বাংলাদেশ দারুণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। স্টান্টিং ২০১৩ সালের ৪২ শতাংশ থেকে কমে ২০১৯ সালে ২৮ শতাংশে হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৫০ লাখের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে।
দীর্ঘস্থায়ী বা ঘনঘন পুষ্টিঘাটতির কারণে ‘স্টান্টিং’ দেখা দেয় এবং স্টান্টিংয়ের কারণে একটি শিশুর শরীর ও মস্তিষ্কের যে ক্ষতি হয় তা পূরণ করা যায় না। এটি প্রথমে স্কুলে এবং পরে কর্মক্ষেত্রে কাজের দক্ষতা কমিয়ে দেয় এবং শিশুদের সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকিতে ঠেলে দেয়।
‘ওয়েস্টিং’ হল পুষ্টির ঘাটতিজনিত অবস্থার একটি তীব্র রূপ, যা প্রাণঘাতী হতে পারে। এর ফলে খাবারের অভাবে বা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপক মাত্রায় ওজন কমে যায়।
অতিদরিদ্র পরিবারগুলোতে জন্ম নেয়া শিশুদের ‘স্টান্টিং’ ও ‘ওয়েস্টিং’-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। আর যখন বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় আঘাত হানে, তখন আগে থেকেই অরক্ষিত অবস্থায় থাকা এই শিশুদের জন্য ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
তহবিল সংগ্রহের প্রচারাভিযান প্রসঙ্গে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অধিকার রক্ষায় এগিয়ে আসা অন্যতম মহৎ একটি উদ্যোগ। এই রমজানে ইউনিসেফ বাংলাদেশের মানুষকে নিজ দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের সহায়তায় সংস্থাটির সঙ্গে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।’