জাহাঙ্গীর, রাঙ্গামাটি জেলা প্রতিনিধি
রাঙ্গামাটি জেলায় এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষিকা আজ ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার জেলা প্রশাসক, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন রাঙ্গামাটির এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে একজন শিক্ষক শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত হওয়ায় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষক সমাজ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করে বলেন, রাষ্ট্রের টেকসই সংস্কারের জন্যই শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার জরুরি, শিক্ষাব্যবস্থার টেকসই সংস্কারে অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা মহানায়কের ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। বৈষম্য বিরোধী বিপ্লবী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও নতুন সরকারকে গোছাতে হবে সকল বৈষম্য ও বঞ্চনা। শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট আমাদের এটাই প্রত্যাশা।
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলেই আশা করে দেশের ক্রান্তিলগ্নে ভঙ্গুর শিক্ষার আমূল পরিবর্তনে আপনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে আপনার মেধা, সৃজনশীলতা ও প্রজ্ঞার প্রয়োগ ঘটিয়ে শিক্ষাব্যবস্থার গুণগত মান পরিবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষায় অভূতপূর্ব সাফল্য আনতে পারবেন বলে আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি।
সারাদেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শতকরা ৯৭ ভাগ এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫ লক্ষ শিক্ষক কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। সারাদেশের এই বিরাট সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষাকতা করে চলেছে অবহেলিত থেকে। মাধ্যমিক পর্যায়ে এসব শিক্ষকেরা প্রবেশন পর্যায়ে ১২,৫০০/- টাকা বেতন, ১০০০/- টাকা বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, সেই সাথে আবার ১০% কর্তন গ্রহণ করা হলে যা বর্তমান বাস্তবতায় কোনভাবেই কাম্য নয়। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির বাজারে এই বেতন দিয়ে একজন শিক্ষকের সংসার চালানো কখনোই সম্ভব নয়। আবার আমাদেরকেই অভিভাবক হিসেবে প্রদান করতে হয় অতিরিক্ত টিউশন ফি, যা আরও বেশি কষ্টকর। জাতীয়করণ হলে শুধু শিক্ষক হিসেবেই নয়, অভিভাবক হিসেবেও আমরা এবং সকল অভিভাবকও উপকৃত হবে ইনশাল্লাহ। শিক্ষকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় মানসিকভাবে সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকে। ফলে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান ও শিক্ষক হিসেবে সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এর ফলে আমাদের শিক্ষা, শিক্ষার্থী ও সর্বোপরি পুরো জাতিই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই শিক্ষায় সৃজনশীলতা বৃদ্ধি, পাঠদান সমৃদ্ধ করা, শিক্ষাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে শিক্ষকদের সকল বৈষম্য দূর করে মানসিক শান্তি ও সামাজিকভাবে মর্যাদা বৃদ্ধি করতে এবং সবচেয়ে মেধাবী ও যোগ্য ব্যক্তিকে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন বলে আমরা তরুণ শিক্ষক সমাজ মনে প্রাণে বিশ্বাস করি।
শিক্ষক বৃন্দ উল্লেখ করেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকুরী জাতীয়করণ এবং শিক্ষকদের জন্য উচ্চতর বিশেষ বেতন কাঠামো তৈরির মাধ্যমে আর্থিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করে সবচেয়ে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় যোগদানের নিশ্চয়তা প্রদান করে দেশের সর্বস্তরের শিক্ষার মান উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে কিছু যৌক্তিকতা বাস্তবতার নিরীখে সদয় বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করছি। আশা করি আপনার মাধ্যমেই এর অবসান হবে ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখিত বিষয়টি সুবিবেচনায় নিয়ে কয়েক লাখ অসহায় শিক্ষকের মানসিক ও সামাজিক দুরাবস্থার কথা চিন্তা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বিশেষ অণুরোধ করেন রাঙ্গামাটি জেলার অবহেলিত শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ।