রাজধানীর বনানীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দুই সেনা সদস্যসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে বনানীর ১৭ নম্বর সড়ক থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর পোশাক, জুতা, পরিচয়পত্র, তালা ভাঙার সরঞ্জামাদি উদ্ধারসহ একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে।
আজ বুধবার রাতে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সরোয়ার।
রাসেল সরোয়ার বলেন, গতকাল রাতে ১৭ নম্বর সড়কের স্টার কাবাবের সামনে তাঁরা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেখানে এ সময় উপস্থিত থাকা আরও দুই সেনাসদস্যসহ তিনজন পালিয়ে গেছেন। গ্রেপ্তার দুই সেনাসদস্যকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য দুজনকে আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নাম জানাননি ওসি।
এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) একটি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তার দুই সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে সেনা আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ওসি রাসেল সরোয়ার বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক রয়েছেন। তাঁর কাছে ক্যামেরা ও নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। ডাকাত দলের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে বনানী থানার একটি টহল দল। এই দল স্টার কাবাবের সামনে জটলা দেখে এগিয়ে যায়।
তারপর সন্দেহভাজন হিসেবে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। আরও কয়েকজন পালিয়ে যান। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর পোশাক, জুতা, পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি ডাকাতিতে ব্যবহার করা একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে তালা ভাঙার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১১ অক্টোবর রাতে মোহাম্মদপুরের তিন রাস্তার মোড়ে বেড়িবাঁধ এলাকায় এক ব্যবসায়ীর বাসায় ও কার্যালয়ে ডাকাতি হয়। এ সময় সেনাবাহিনী ও র্যাবের পোশাক পরা ডাকাতরা নিজেদের যৌথ বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দেন। তাঁরা ৭৫ লাখ টাকা ও ৭০ ভরি সোনা লুট করেন বলে গৃহকর্তা ও পুলিশ সূত্র জানায়।
এই ডাকাতির তদন্তে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার সাবেক এক সেনা কর্মকর্তার নাম এসেছে। ওই কর্মকর্তা র্যাব সদর দপ্তরের একটি শাখার প্রধান ছিলেন। ২০১৯ সালে তাঁকে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অকালীন (বাধ্যতামূলক) অবসরে পাঠানো হয়।
এ ছাড়া এই ডাকাতির ঘটনায় র্যাব ৪-এ কর্মরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন সদস্যের (নন-কমিশন্ড) নাম এসেছে। এ ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয় বলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছিল।