রাজশাহী প্রতিনিধি:- জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ যতো এগিয়ে আসছে, ততোই মনোনয়ন প্রত্যাশিরা জড়তা ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন নির্বাচনের মাঠে।
রাজশাহীর ১ আসনের রাজনীতিতে হঠাৎ ঝড় তুলেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী আয়েশা আখতার ডালিয়া। তিনি মনোনয়ন চান রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে।
বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর আসনে। যদিও দলে ডালিয়ার কোনো পদ-পদবি নেই।
হঠাৎ করে এমপি ফারুক চৌধুরীর নির্বাচনী দুর্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী ডালিয়ার আকস্মিক আঘাত হানায় শঙ্কিত ও বিব্রত হয়ে পড়েছেন এমপি ফারুক চৌধুরী।
ডালিয়ার হঠাৎ রাজনীতির মাঠে নামায় রাজশাহীতে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নানা গুঞ্জন চলছে। তাঁর স্বামী পররাষ্ট প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম রাজশাহী-৬ আসনের এমপি। ফলে আগামী নির্বাচনে স্বামী-স্ত্রী দুইজন দুই আসনের এমপি মনোনয়নের দৌড়ে মাঠে নামবেন- রাজশাহীর রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে চলছে ডালিয়া ও এমপি ফারুকের পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল আলোচনা
আর এ নেপথ্যের কারণও খুঁজছেন রাজশাহীর রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সাংবাদিকদের ডালিয়া বলেন, তানোর-গোদাগাড়ী আসনটিতে তার বাবা- দাদার বাড়ি’, তার জন্মস্থান। আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘ সময়ে ক্ষমতায় থাকার পরও তানোর-গোদাগাড়ী আসনে কেন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি, এটা তার বোধগম্য হচ্ছেনা।
তিনি আরো বলেন এমপি ফারুকের বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য এমপি ফারুক চৌধুরী ৩ বার এমপি থাকা সত্ত্বেও আওয়ামীলীগ সভা নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকে এলাকার উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এর ফলে এ এলাকার সাধারণ মানুষের জীবন মনের কোন উন্নয়ন হয়নি, দ লাগেনি কোন আধুনিকতার ছোঁয়া।
সংবাদ কর্মীদের সাথে অসৈজন্য মূলক আচরণ , ক্ষমতার অপব্যবহার, দলের বিরূপ মন্তব্য, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দমন পীড়ন, তৃণমূল কর্মীদের অবমূল্যায়ন সহ নানা কারনে এলাকায় সমালিচিত তিনি। এছাড়া সম্প্রতি তা নির্বাচনী এলাকায় এক অধ্যক্ষ করে প্রকাশ্যে মারধর, আবার তাকে ভয় দেখিয়ে বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অস্বীকার করানোর বিষয়েও আসনটির সচেতন মহলে ও তৃণমূল পর্যায়েও সমালোচিতো তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি এই আসনে নির্বাচনী লড়াইয়ে প্রস্তুত এবং জয়ী হওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী।
ডালিয়ার এমন বক্তব্যের পরই রাজশাহীর রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে। ওমর ফারুক চৌধুরীকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। আবার অনেকে বিষয়টি রাজনীতির স্বাভাবিক খেলা হিসেবে দেখছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পক্ষে-বিপক্ষে সরব ডালিয়া ও ফারুক চৌধুরীর সমর্থকরা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, তিনি শুনেছেন আয়েশা আখতার ডালিয়াও আগামীতে মনোনয়ন প্রত্যাশী। দলের কাছে তিনি মনোনয়ন চাইতেই পারেন। দল সেটি বিবেচনা করবে।
গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দলের লোকজনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, এমন কাউকে দল নিশ্চয় বিবেচনা করবে না। তিনি সাময়িক আলোড়ন তুলতে এমনটা করছেন। দল ভালো করেই জানে, এ আসনটিতে কাকে মনোনয়ন দিলে আসনটি ধরে রাখা সম্ভব। স্বামীর পরিচয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন না।
তবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী আয়েশা আখতার ডালিয়ার এমন প্রত্যাশা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। রাজশাহী-১ আসনের তিনবারের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী।
এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী নানা কাণ্ডে বিতর্কিত হয়ে আছেন। গত নির্বাচনেও তার মনোনয়ন ঠেকাতে সেভেন স্টার নামে সাত প্রার্থী নেমেছিলেন ভোটের মাঠে।