রাজশাহী প্রতিনিধি:-দুই বছর ধরে মিতুলের পরিবারের অন্যতম সদস্য ‘পুষি’। নিজে যা খান সেই খাবার এই ‘পুষি’র জন্য বরাদ্দ। পাশাপাশি খাবারের মেন্যুতে দুধ,মাছ ও বিস্কুট পুষির জন্য নিত্যদিনের আইটেম। এটির জন্য ঘুমের ব্যবস্থাও আলিসান বিছানাতেই। কিন্তু হঠাৎ পুষি অসুস্থ হয়ে পড়ে। ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে এটির ডান চোখ লাল হয়ে ফুলে যায়। বিড়ালটির এই অবস্থা দেখে ‘পুষি’র মুনিব (মালিক) মিতুলও হয়ে পড়েন অনেকটা অসুস্থ। বিড়ালটিকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে স্মরণাপন্ন হন ভেটেনারী চিকিৎসকের।
গত শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) পুষিকে নিয়ে যান নগরীর টিকাপাড়ার বাশার রোড এলাকার ‘কিটক্যাট’ এ (কেয়ার এন্ড কিউর)। পুষিকে দেখান ‘পোষা প্রাণির আধুনিক এই চিকিৎসা কেন্দ্র’র ভেটেনারী সার্জন ডা. মো. নিয়ামত উল্লাহকে। বিড়ালটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুস্থ হতে ব্যবস্থাপত্রে কিছু ওষুধও লিখে দেন তিনি। কিন্তু ‘সাজেস্ট’ করা ওষুধের দুই-একটি বাদে অন্য ওষুধগুলো কোথাও খুঁজে না পেয়ে ঔষধ গুলোর বিকল্প ঔষধের জন্য একাধিক বার পরামর্শ চেয়ে ব্যার্থ হন।
এদিকে বিড়ালটির অবস্থার অবনতি হতে থাকলে বাধ্য হয়ে বিড়ালটির মালিক মিতুল প্রতিকার পেতে সরাসরি রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিলের নিকট ওই ডাক্তারের চিকিৎসার অবহেলা ও সহযোগিতা না করার জন্য লিখিত অভিযোগ করেন এবং পুষিকে কিভাবে সুস্থ করে তোলা যায় সেই পরামর্শ চান ডিসির কাছে।
মিতুল বলেন, পুষিকে দেখাতে ডাক্তার ৫০০টাকা পরামর্শ ফি-ও নেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়- তিনি শুধুমাত্র দেখেই ওষুধ লিখেছেন। বিড়ালের চোখ তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার করা ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল কিন্ত সেটা তিনি করেননি। ডাক্তারের কোনো সহযোগিতা পাইনি।
মিতুল আরো বলেন, ‘আমি কেন ৫০০ টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখলাম? এসকল ডাক্তার থেকে কী লাভ, যদি চিকিৎসা না পাই? তাদের অবহেলার জন্য বিড়াল যে কষ্ট পাচ্ছে , যে ক্ষতিগ্রস্ত হলো এর বিচার কে করবে? সে কেমন ডাক্তার, বিকল্প ওষুধের নাম বলতে পারে না? তাহলে কি আমার কাছ থেকে টাকা নিলো শুধু ওষুধ লেখার জন্য?
জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বললেন,
মিতুল নামে এক যুবক তার পোষা বিড়ালের চিকিৎসার অবহেলা জন্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে।
তিনি বিষয়টি শুনে তৎক্ষণাৎ জেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হককে টেলিফোন করে বললেন, ‘মিতুল নামে একটি ছেলে একটি বিড়াল নিয়ে আগামীকাল (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় আপনার কাছে যাবে। বিড়ালের সমস্যা দেখে আপনি চিকিৎসা দিবেন, যাতে বিড়ালটি দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ‘কিটিক্যাট’ এর ভ্যাটেনারী সার্জন ডা. মো. নিয়ামত উল্লাহ’র মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।