কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার একটি যুদ্ধজাহাজে হামলা চালানোর দাবি করেছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। তবে, রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা স্বীকার না করলেও জাহাজটিতে বিস্ফোরণ ও আগুন ধরে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের ফ্ল্যাগশিপ, অর্থাৎ, অন্যতম যুদ্ধজাহাজ মসকভা ‘গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তবে কীভাবে তা হয়েছে, সে বিষয়ে রাশিয়া কিছু জানায়নি। তারা কেবল জানিয়েছে, বিস্ফোরণের ফলে এ ঘটনা ঘটেছে।
ইউক্রেন আগেই দাবি করেছে, তাদের গোলার আঘাতেই জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, জাহাজটি কৃষ্ণসাগরে দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের ছোঁড়া রকেটের আঘাতে জাহাজটিতে বিস্ফোরণ হয়। তবে এর ফলে ক্ষয়ক্ষতি কী হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি কোনোপক্ষই।
ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসার গভর্নর বলেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী বুধবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে কৃষ্ণসাগরে একটি রাশিয়ান যুদ্ধজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। রুশ এই যুদ্ধজাহাজটিতে ইউক্রেনের তৈরি নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে।
রাশিয়ার এই যুদ্ধজাহাজের নাম মস্কভা। রুশ এই যুদ্ধজাহাজে হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্টোভিচ বলেন, রাশিয়ার কৃষ্ণসাগর বহরের মস্কভা যুদ্ধজাহাজে একটি আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে।
ইউটিউব ব্রডকাস্টে তিনি আরও বলেন, ‘জাহাজটি ব্যাপকভাবে পুড়ে গেছে। এখনই (এই ঘটনা ঘটেছে)। আর এই উত্তাল সাগরে তারা (রাশিয়া) কোনো সাহায্য পাবে কি না সেটিও অনিশ্চিত। রুশ এই যুদ্ধজাহাজটিতে ৫১০ জন ক্রু রয়েছেন। কি হয়েছে আমরা বুঝতে পারছি না’।
এদিকে কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন যুদ্ধজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। বুধবারের এই ঘটনার পর মস্কো জানিয়েছে, আগুন ধরে যাওয়ার পর একটি বিস্ফোরণের কারণে রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের একটি ফ্ল্যাগশিপ গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া জাহাজে অবস্থানরত ক্রুদেরও নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটি।
মারিওপোলে রাশিয়ার দাবি
এদিকে বুধবার রাশিয়া দাবি করেছে, মারিওপোল এখন পুরোপুরি রাশিয়ার দখলে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, সেখানে ইউক্রেনের এক হাজার সেনা আত্মসমর্পন করেছে। মারিওপোলে লড়াইও বন্ধ হয়েছে বলে রাশিয়া দাবি করেছে।
ইউক্রেন অবশ্য জানিয়ছে, এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। মারিওপোল রাশিয়া দখল করে ফেলেছে বলেও স্বীকার করেনি ইউক্রেন। স্বীকার করেনি সেনা আত্মসমর্পনের দাবিও।
আমেরিকার সাহায্য
মঙ্গলবারই আমেরিকা জানিয়েছিল, ইউক্রেনকে বিপুল অর্থের অস্ত্রসাহায্য করা হবে। বুধবার আমেরিকা ইউক্রেনের জন্য ৮০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে বেশ কিছু অস্ত্র জাহাজে তুলেও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আমেরিকা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, নতুন অস্ত্রে ইউক্রেন আরো শক্তিশালী লড়াই চালাতে পারবে। এর মধ্যে হেলিকপ্টার, অত্যাধুনিক ড্রোন, যা ব্যাকপ্যাকের সাহায্যে চালানো যায়, গোলাবারুদ এবং সাজোয়া গাড়ি আছে।