ইউক্রেন আটকাপড়া ও রকেট হামলার কবলে পড়া বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজ থেকে রাশিয়ার সহায়তায় ২৮ জন নাবিককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
ওই ২৮ নাবিক এবং নিহত একজনের লাশ ইউক্রেনের পাশের কোনো দেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘রাশিয়া জীবিত ২৮ জনকে নিরাপদে সরিয়ে আনা এবং নিহত নাবিকের লাশটি সরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আজই আমরা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পেয়েছি, যেটির খুব দরকার ছিল। যুদ্ধ পরিস্থিতিকালে জাহাজকে পরিত্যক্ত করার অনুমতি দিয়ে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। এটি আমরা তাদের (ইউক্রেন) জানিয়ে দিয়েছি।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এই মুহূর্তে তারা (২৮ নাবিক) এখন যেখানে রয়েছেন, সেখান থেকে নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন। পরে হয়তো কোনো একটা বাংকার বা অন্য কোনো নিরাপদ জায়গায় যাবেন। সেখান থেকে পরে তাদের নিরাপদে যে দেশের সীমান্ত দিয়ে সম্ভব ইউক্রেন থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। পোল্যান্ডের সীমান্ত পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়েছে। সেখানে ভিড় অনেক বেশি।
রকেট হামলার কবলে পড়া বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের কী হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাহাজটি এখন পরিত্যক্ত রেখে আসতে হবে। কারণ, সেখানে মাইন পাতা রয়েছে। কাজেই জাহাজটা এখন যেখানে রয়েছে সেখান থেকে সরানো ঝুঁকিপূর্ণ।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এ জাহাজটি তুরস্কের ইরাগলি বন্দর থেকে পণ্য বোঝাই করতে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। দুই দিন পর অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় নোঙর করে। পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করলে জাহাজটি আটকে যায়। এক সপ্তাহের মাথায় হামলার শিকার হয়।
বুধবারের হামলার পর এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে আগুন ধরে যায়। শুরুতে নাবিকেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। অলভিয়া বন্দর থেকে একটি টাগবোট এসে আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। নাবিকদের চেষ্টায় জাহাজের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। হামলায় জাহাজের ব্রিজ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে নিথর দেহ পড়ে ছিল হাদিসুর রহমানের।