প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ‘ধর্মের জন্য সব চেয়ে বিপদজনক হলো অজ্ঞতা। এ অজ্ঞতা ভিন্ন ধর্মের ও ভিন্ন মতাবলম্বী মানুষের প্রতি হিংসা ও মানুষের সঙ্গে মানুষের বিভেদ তৈরি করে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ধর্ম যার যার কিন্তু বাংলাদেশ আমাদের সবার। রাষ্ট্র সবার না হলে নাগরিকেরা রাষ্ট্রের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করতে পারবে না। ফলে রাষ্ট্র নাগরিকের কাছ থেকে আনুগত্য আশা করতে পারবে না।’ বিজয়া পুনর্মিলনী ও বাণী অর্চনা উদযাপন-২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এ অঞ্চলের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় প্রাচীন বাংলায় প্রত্যেক ধর্মের মানুষের মধ্যে মৈত্রী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। ধর্মের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো অজ্ঞতা। এই অজ্ঞতাই মানুষের সঙ্গে মানুষের বিবেধ তৈরি করে। প্রত্যেক ধর্মের মানুষ যদি নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থ সঠিকভাবে ও খোলা মন নিয়ে পাঠ করে, ধর্মীয় বিধানগুলোর হৃদয়াঙ্গম করে, তাহলেই অজ্ঞতার অন্ধকার কেটে যাবে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতি সব ধর্ম ও মানুষকে এক সারিতে আনতে পেরেছিল বলেই সব ভেদাভেদ ভুলে ভাষার জন্য আন্দোলন করে জয়ী হয়েছি। বাংলাদেশের সবার গৌরবদিপ্ত অহংকার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে এ দেশের সব ধর্মের মানুষ।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে এ দেশের সব মানুষের ধর্ম ও নিরাপত্তার সমান অধিকারের কথা উল্লেখ আছে। আইনের বিচারে সব ধর্মই সমান। সংবিধান এ দেশের সব ধর্মের মানুষের সম্মান দেয়। তাই যে কোনো ধর্ম অবমাননা বা ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির প্রমুখ।