দোনবাস অঞ্চলে রুশ বাহিনীর আক্রমণে ইউক্রেনের সেনারা প্রচণ্ড চাপের মুখে আছে বলে স্বীকার করেছে কিয়েভের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউক্রেনের পূর্বদিকের দোনবাস অঞ্চলের সেভারোডোনেৎস্ক ও লিসিচানস্ক- এ দুটি শহরকে ঘিরে ফেলার চেষ্টায় এগুলোর ওপর রুশ বাহিনী প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ করছে।
বৃহস্পতিবার বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
লুহানস্কের অধিকাংশ এলাকাই এখন রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। যে এলাকাগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই, সেগুলোই দখলে নেয়ার চেষ্টা করছে রুশ সেনারা।
দোনবাস অঞ্চলের অর্ধেক এলাকাই লুহানস্কের অন্তর্গত এবং রাশিয়া এখন এ জায়গাটিকেই তাদের যুদ্ধপ্রয়াসের প্রধান কেন্দ্রে পরিণত করেছে। বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, রাশিয়া যদি দোনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পাওে, তাহলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হয়তো ইউক্রেন যুদ্ধে বিজয় ঘোষণা করতে পারেন।
কিয়েভ থেকে বিবিসির জো ইনউড জানাচ্ছেন, পূর্ব দোনবাসে রাশিয়া ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রাম দখল করেছে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীকে আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে ঠেলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তারা এটা করতে পারছে। কারণ সেনা, কামান, সাঁজোয়া যান এবং বিমানবাহিনীর শক্তি- সব ক্ষেত্রেই সংখ্যার দিক থেকে ইউক্রেনকে পেছনে ফেলেছে রুশরা।’ তিনি বলেন, ‘ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী অবশেষে কিছু সাফল্য পাচ্ছে।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবিসি নিউজকে বলেন, দোনবাস অঞ্চলে একেকজন ইউক্রেনীয় সেনার বিপরীতে সাতজন করে রুশ সেনা আছে।
কিয়েভে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র ওলেক্সান্দর মোতুজিয়ানিক বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনো ওই দুটো শহরে যাবার প্রধান রাস্তাটি নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে যুদ্ধ এখনো চলছে।
লুহানস্ক প্রদেশের গভর্নর সেরহি হাইদাই বলেন, ওই রাস্তাটি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ চলছে। কিন্তু এটি এখনো সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়নি। তিনি বলেন, দিনরাত গোলাবর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ও বিমান থেকে বোমা ফেলে সেভারোডোনেৎস্ক শহরটিকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে।
হাইদাই জানান, রুশ বাহিনী এখন এতটাই কাছে চলে এসেছে যে, তারা রকেটের পাশাপাশি মর্টারও ব্যবহার করছে। এছাড়া এখান থেকে অনেকটা দূরে ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া এবং ক্রিভি রিহ শহর দুটির ওপরও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্টে এতে লোক হতাহত হয়েছে বলেও জানা গেছে।
রাশিয়া বলেছে, তাদের ওপর থেকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে তারা ইউক্রেনের অবরুদ্ধ বন্দরগুলো থেকে খাদ্যশস্যবাহী জাহাজ বেরুতে দেবে।
ইউক্রেন হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য উৎপাদনকারী। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘খাদ্যকে একটি অস্ত্রে পরিণত করার’ অভিযোগ এনেছে।