মাহে রমজানের অন্যতম বিধান সিয়াম সাধনা। এর জন্যও নিয়ত জরুরি। কিন্তু সেই নিয়ত কখন, কীভাবে করতে হয়। চলুন জেনে নিই সে সম্পর্কে-
রোজার নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত অর্থ সংকল্প। যেমন-মনে মনে এ সংকল্প করবে, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আগামীকালের রোজা রাখছি। মুখে বলা জরুরি নয়। (সহিহ বোখারি : ১/২, বাদায়েউস সানায়ে : ২/২২৬)।
রোজার নিয়ত কখন করতে হয়: ফরজ রোজার নিয়ত রাতেই করা উত্তম। (সুনানে আবি দাউদ : ১/৩৩৩, বাদায়েউস সানায়ে : ২/২২৯)।
তবে রাতে নিয়ত করতে না পারলে: রাতে নিয়ত করতে না পারলে দিনে সূর্য ঢলার প্রায় এক ঘণ্টা আগে নিয়ত করলেও রোজা হয়ে যাবে। (সহিহ বোখারি : ২০০৭, বাদায়েউস সানায়ে : ২/২২৯)।
সেহরি খাওয়ার দ্বারাই নিয়ত হয়ে যায়?
হ্যাঁ, রোজার জন্য সেহরি খেলেও রোজার নিয়ত হয়ে যায়। আল বাহরুর রায়েক-২/২৫৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া- ১/১৯৫
রোজা কার ওপর ফরজ?
প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিস্কের অধিকারী মুসলমান নারী-পুরুষের ওপর রমজানের রোজা রাখা ফরজ, যখন সে সুস্থ ও মুকিম অবস্থায় থাকবে। সুতরাং নাবালেগ, পাগল ও কাফেরের ওপর রোজা ফরজ নয়। আর অসুস্থ কিংবা মুসাফিরের ওপর রমজানের রোজা ফরজ বটে; তবে তা ওই অবস্থায় আদায় করা ওয়াজিব নয়। (ফাতাওয়া আলমগিরি-১/১৯৫)
রোজা সহিহ হওয়ার শর্ত
রোজা সহিহ হওয়ার শর্ত দুটি। ১. রোজার নিয়ত করা। সুতরাং কেউ নিয়ত না করে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার এবং স্ত্রী মিলন থেকে বিরত থাকলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে তা রোজা হিসেবে গণ্য হবে না।
২. নারী হায়েজ ও নেফাস থেকে পবিত্র হওয়া। অতএব মাসিক পিরিয়ড বা নেফাস চলাকালীন কোনো মহিলা রোজা রাখলে তার রোজা শুদ্ধ হবে না। (ফাতাওয়া আলমগিরি-১/১৯৫)
রোজার নিয়ত কীভাবে করব?
নিয়ত একটি আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ হলো মনে মনে ইচ্ছা করা। অতএব কেউ যদি সূর্যাস্তের পরবর্তী কোনো একসময়ে মনে মনে এই ইচ্ছা করে যে, আমি আগামীকাল রমজানের রোজা রাখব, তা হলে তার নিয়ত সংঘটিত হয়ে যাবে। নিয়ত সহিহ হওয়ার জন্য মুখে উচ্চারণ করা শর্ত নয়। তবে তা উত্তম। (ফাতাওয়া আলমগিরি-১/১৯৫)
রোজার নিয়ত কখন করব?
সূর্যাস্তের পর থেকে পূর্ব অর্থাৎ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়ের আগ পর্যন্ত রমজানের রোজার নিয়ত করার অবকাশ আছে। তবে সুবহে সাদিকের আগেই নিয়ত করে নেয়া উত্তম। (বাদায়েউস সানায়ে- ২/২২৯; আল বাহরুর রায়েক-২/২৫৯)