শ্রীলংকার বিপক্ষে ১১ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭৩ রানে ৩ উইকেট। জয় পেতে তখনও ৫৪ বলে ৫২ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। এমন উইকেটে খুব একটা সহজ নয় এই কাজ। কেননা, খানিক আগেই শেষ ৩৬ বলে মোটে ২৪ রান তুলতে পেরেছিল লংকানরা। তাই শঙ্কা ছিলই। তবে সেই শঙ্কা দূর করার দায়িত্বটা কাঁধে তুলে নিলেন তাওহীদ হৃদয়। ইনিংসের ১২তম ওভারে লংকান অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্কাকে টানা তিনটি ছক্কা হাঁকালেন পরপর। চতুর্থ বলেই একই কাজ করতে গিয়ে বল মিস করলেন হৃদয়। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরতে হলো তাকে। তবে ফেরার আগে ঠিকই ২০ বলে ৪০ রান করে দিয়ে গেছেন এমন উইকেটে। তাতেই জয়ের সুবাস পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
এরপর মাঝে লিটন ও সাকিব দ্রুত ফিরলে খানিকটা শঙ্কাও জাগে হারের। তবে সেই শঙ্কা আরও ঝেঁকে বসে মাহমুদউল্লাহকে রেখে পরপর রিশাদ ও তাসকিন ফিরলে। মনে হচ্ছিল মাহমুদউল্লাহ সুযোগ পাবেন তো শেষ পর্যন্ত। অবশেষে সুযোগটা পান তিনি। দাসুন শানাকার ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই হাঁকান ছক্কা। দূর হয় সব শঙ্কা। বাংলাদেশ ম্যাচ জেতে ৬ বল ও ২ উইকেট হাতে রেখে। তাতে জয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু হয় নাজমুল শান্তর দলের।
এদিন বাংলাদেশের জয়ের রাস্তাটা প্রশস্ত করে দিয়ে গিয়েছিল বোলাররাই। ১৪ ওভারে দলীয় শত রান করা লংকানদের শেষ ৬ ওভারে আটকে দিয়েছিল মাত্র ২৪ রানে। তাতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৫ রানের। টি টোয়েন্টিতে যে কোনো উইকেটেই যা অতি মামুলি। তবে সেই টার্গেটটাই কঠিন করে তুলেছিল বাংলাদেশে টপ অর্ডার ব্যাটাররা। পাওয়ার প্লের আগেই ২৮ রানে খুইয়ে ফেলেছিল ৩ উইকেট। তাতে খানিকটা শঙ্কাও উঁকি দিচ্ছিল হারের। তবে সেই শঙ্কা দায়িত্ব নিয়েই দূর করে গেছেন লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দু’জনে মিলে জমা করেছেন ৬৩ রান।
এরপর অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে হাসারাঙ্গার বলে ২০ বলে ৪০ রান করে ফিরতে হয় হৃদয়কে। এরপর লিটন ফিরে যান ৩৮ বলে ৩৬ রান করে। খানকি পর ১৪ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফিরে যান সাকিবও। তাতেই শঙ্কায় পড়ে যায় বাংলাদেশের জয়। এরপর তুষারার পরপর দুই বলে রিশাদ ও তাসকিন ফিরলে সেই শঙ্কা আরও বাড়ে। তবে দায়িত্ব নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। খেলেছেন ১৩ বলে ১৬ রানের হার না মানা এক ইনিংস।
এর আগে, টসে জিতে শ্রীলংকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। শুরুতে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন দলটির ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। যদিও অপর প্রান্ত থেকে নিয়মিত উইকেট পড়ছিল। এরপরও বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে ফেলেছিল শ্রীলংকা। ১৪ ওভারেই ছুঁয়েছিল দলীয় শত রান।
তবে নিশাঙ্কা ২৮ বলে ৪৭ রান করে ফিরলে বাকিরা হাঁটতে পারেনি তার দেখানো পথে। মাঝে উইকেটে ধনঞ্জয়া ও আসালাঙ্কা জমে উঠার চেষ্টা চালিয়েছেন মাত্র। তাতে অবশ্য খানিকটা ভয় ঝেঁকে বসেছিল বাংলাদেশের। তবে সেই ভয় দূর করেছেন রিশাদ। ১৬তম ওভারে এসে পরপর ফিরিয়েছেন আসালাঙ্কা ও হাসারাঙ্কাকে। তাতেই বড় সংগ্রহের স্বপ্নটা শেষ শ্রীলংকার। বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত লংকানদের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ১২৪ রানে।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ ও রিশাদ। মুস্তাফিজ ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৭ রান খরচায় তুলেছেন ৩ উইকেট। অন্যদিকে ২২ রান খরচায় রিশাদের শিকার ৩ উইকেট। ২ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন।